শিক্ষকের বিচার দাবি, না.গঞ্জ অচলের হুমকি
বন্দর উপজেলার কল্যান্দী পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। অবিলম্বের বিচার শুরু না হলে কঠোর কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জকে অচল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় মানববন্ধন থেকে।
আজ রোববার দুপুর ১২টা থেকে একটা পর্যন্ত নগরীর চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে চেম্বারের উদ্যোগে আটটি জাতীয়ভিত্তিক ও ৩৫টি জেলাভিত্তিক সংগঠন এ মানববন্ধনে অংশ নেয়।
এ সময় সভাপতির বক্তব্যে চেম্বারের সহসভাপতি মঞ্জুরুল হক প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, ‘তিনি ২০১৫ সালে চাকরি দেওয়ার নাম করে এক শিক্ষকের কাছ থেকে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। একই বছরের ২৪ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ নিয়ে অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনার কী হয়েছে আমরা জানি না। কিন্তু এতে বোঝা যায়, তিনি কী ধরনের মানুষ। তিনি শুধু ইসলাম ধর্ম নয়, হিন্দু ধর্ম নিয়েও কটূক্তি করেছিলেন।’
শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সমাজের মধ্যে কিছু ‘উচ্ছৃঙ্খল মানুষ’ প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের পক্ষ নিয়েছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন মঞ্জুরুল হক।
শ্যামল কান্তি ভক্তের বিচার দাবি করে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের কিছু হলে নগরীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী গাড়ি, ক্যাবল নেটওয়ার্ক বন্ধসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি শফিউদ্দিন প্রধান, ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েনের সভাপতি লিটন সাহা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাফায়েত আলম সানি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মহিলা কাউন্সিলর ইসরাত জাহান স্মৃতি, এস বি স্যাটেলাইটের পরিচালক আব্দুল করীম বাবু প্রমুখ।
গত ১৩ মে (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ১০টার ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে ওঠ-বস করান। এরপর শ্যামল কান্তি ভক্তকে বিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ নিয়ে হাইকোর্ট শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানাতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ গত ১৯ মে শিক্ষককে লাঞ্ছনার ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন পেশ করেছে। এতে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন বলে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এর ভিত্তিতে কমিটি তাঁকে স্বপদে বহালের সুপারিশ করেছে। তদন্ত কমিটি স্কুলের আগের কমিটি বাতিলের সুপারিশ করে।