পটুয়াখালীতে ২২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত
ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর আটটি উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ২২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ছয় কিলোমিটার সম্পূর্ণ এবং সাড়ে ১৫ কিলোমিটার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পাউবোর পটুয়াখালী জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহনেওয়াজ এবং কলাপাড়া জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল খায়ের আজ সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঝড়ে কলাপাড়া উপজেলার নিজামপুর, লালুয়া, রাঙ্গাবালী উপজেলার চরআণ্ডা, চরবেষ্ঠিন, চর মোন্তাজ এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে। পাশাপাশি অতিবৃষ্টির কারণে লোকালয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এসব এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ জোয়ারে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পূর্ণিমার আর ‘রোয়ানু’র প্রভাবে পানি প্রবেশ করে নামতে পারছে না সাগর ও নদীর পানিতে টান না থাকায়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, অতিবৃষ্টির কারণে বিক্ষিপ্তভাবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। এসব রাস্তা মেরামত করতে এক কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন হবে। এ ছাড়া নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধিসহ ঝড়ের কারণে জেলার পাঁচটি ফেরিঘাটে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, আটটি উপজেলায় এক হাজার ৩২২ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন সবজি, ১৯৬ হেক্টর জমির আউশ বীজতলা, ৫০ হেক্টর জমির পানবরজ, বাদাম, কাঁচামরিচ, ঝিঙা, রেখা, শসার ক্ষতি হয়েছে।
লোহালিয়া ইউনিয়নের রবিশস্য চাষি ফারুক মুন্সী জানান, প্রায় এক একর জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ঝিঙা, রেখা, শসা, বাদাম ও কাঁচামরিচের চাষাবাদ করেন। এবারের ঝড়ে তাঁর জমিতে পানি জমে এবং বাতাসের তোড়ে ফসলের কিছু ক্ষতি হয়েছে।
জেলার ৩০০ পুকুর ও ১০০টি মাছের ঘেরে অতিমাত্রার বৃষ্টিসহ জোয়ারের পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। প্রায় এক কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।
এদিকে, জেলার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের জন্য আটটি উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৮০ মেট্রিক টন চাল ও দুই লাখ ২০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী।
কলাপাড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে জনপ্রতি ১০ কেজি করে ৩৬ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, সরকারি ছুটি থাকায় সব বিভাগের ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনো হাতে এসে পৌঁছায়নি। ২৪ মের মধ্যে সব বিভাগের ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ আমরা পেয়ে যাব।