বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে পেছাল শিশু রবিউল হত্যার রায়
বরগুনায় কয়েক দিন ধরে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয় চলছে। এ জন্য প্রস্তুত করা যায়নি শিশু রবিউল আউয়াল (১০) হত্যার রায়ের কপি। তাই আজ বৃহস্পতিবার নির্ধারিত রায়ের তারিখ পেছানো হয়েছে। পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ মে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এ মামলায় রবিউলের বাবা-মা ও পুলিশ, চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ মোট ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার বাদী-বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে বরগুনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ আবু তাহের আজ রায়ের দিন ধার্য করেন।
এ মামলায় বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আখতারুজ্জামান বাহাদুর ও আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান সোহাগ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আক্তারুজ্জামান বাহাদুর বলেন, ‘শিশু রবিউলকে যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, আমরা তা সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে আদালতের কাছে উপস্থাপন করেছি। তাই আমরা
আশাবাদী, আদালত রবিউল হত্যার প্রধান আসামি মিরাজকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করবে।’
গত বছরের ৩ আগস্ট রাতে পেতে রাখা জালের মাছ চুরির অভিযোগে বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ছোট আমখোলা গ্রামের শিশু রবিউলকে (১০) নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তার লাশ পাশের খালে ফেলে রাখে মিরাজ। পরের দিন ৪ আগস্ট বিকেলে স্থানীয় লকরার খালে রবিউলের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন।
ওই দিনই রবিউলের লাশ উদ্ধার করে উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট শিশু রবিউলের বাবা দুলাল মৃধা বাদী হয়ে তালতলী থানায় মিরাজকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলা দায়েরের দিনই মিরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার বরগুনার আমতলী উপজেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বৈজয়ন্ত বিশ্বাসের আদালতে হাজির করা হয়। মিরাজ ১৬৪ ধারায় রবিউলকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে ২৩ আগস্ট মিরাজকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
রবিউল আউয়াল স্থানীয় ফরাজিবাড়ী দাখিল মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। রবিউলের বড় বোন খাদিজা দশম শ্রেণির ছাত্রী। ছোট বোন জান্নাতি সবে হাঁটতে শিখেছে। তালতলীর ফকিরহাট বাজারে রবিউলের বাবা দুলাল মৃধার খুচরা যন্ত্রাংশের একটি ছোট্ট দোকান রয়েছে। ওই দোকানের আয় দিয়েই চলে রবিউলদের সংসার।