ঝালকাঠিতে নিষিদ্ধ হুজির নয়জনের কারাদণ্ড
ঝালকাঠিতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা মশিউর রহমান ওরফে মিলন তালুকদারসহ নয় সদস্যকে চার বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার দুপুরে ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালত-১-এর বিচারক এবং জেলা ও দায়রা জজ মো. শফিকুল করিম এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আদালত প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো তিন মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের আরো দুটি মামলায় আসামিদের খালাস দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন—মশিউর রহমান (৩৩), সিরাজুল ইসলাম (৪৫), নুরুল ইসলাম (২৭), আবদুল বাকী বিল্লাহ (১৮), মো. সোহাগ (৩২), মো. জোবায়ের (২৪), আবুল বাশার মৃধা (৪০), মিনহাজুল আবেদীন (২০) ও আবদুল আজিজ (২৭)।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুল মান্নান রসুল। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আবদুল রশীদ সিকদার।
২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট নলছিটি উপজেলার কামদেবপুর গ্রামের খাদেমুল ইসলাম কওমি মাদ্রাসাসংলগ্ন মসজিদে প্রশিক্ষণ চলার সময় তৎকালীন পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। তাঁদের কাছ থেকে একটি হ্যান্ডগ্রেনেড, চারটি দা, আটটি মোবাইল সেট ও বেশ কয়েকটি জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের বাড়ি ঝালকাঠি, তিনজনের বাড়ি মাদারীপুর ও একজনের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়।
এ ঘটনায় নলছিটি থানার উপপরিদর্শক মাহামুদুল হাসান বাদী হয়ে ১৫ আগস্ট পৃথক দুটি মামলা করেন। তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়। আদালত ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। পরে ১৪ পুলিশ ও সাতজন স্থানীয় ব্যক্তিসহ মোট ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সরকারি কৌঁসুলি আবদুল মান্নান রসুল বলেন, দণ্ডিত হুজি সদস্যরা বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। দুটি মামলায় তাঁদের খালাস দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ রায় দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল রশীদ সিকদার বলেন, ‘আসামিরা কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নয়। সাবেক পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলী প্রেসিডেন্ট পদক পাওয়ার জন্য নিরীহ নয়জনের নামে একটি সাজানো মামলা দায়ের করেন। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’