বিয়ের কথা বলে কিশোরীকে গণধর্ষণ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরীকে গণধর্ষণ করেছে প্রেমিক ও তার বন্ধুরা। গত ১ জুন রাতে এই ঘটনা ঘটে।
এরপর ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে মামলা করতে বাধা দেন জনপ্রতিনিধিরা।
স্থানীয় লোকজন জানায়, ভুরুঙ্গামারীর জয়মনিরহাট ইউনিয়নের জুয়েল মিয়া একই ইউনিয়নের এক কিশোরীর (১৬) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত ১ জুন ওই কিশোরীকে বিয়ের কথা বলে মোবাইল ফোনে ডেকে এনে অটোবাইকে করে বিভিন্ন এলাকা ঘোরে। রাত ৯টার দিকে জয়মনিরহাটের একটি কলেজের নির্জন কক্ষে কয়েকজন বন্ধু মিলে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রথমে জুয়েল ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরে ওই কিশোরীকে বন্ধুদের কাছে রেখে সটকে পড়ে জুয়েল। এর কিছুক্ষণ পর গ্রাম পুলিশ শাহজাহান আলী, বাবুল বাদশাহ (২০), আবু হানিফ (৩৫), আবদুর রহিম (২৮), খাইরুল হক (২৬), সুজন মিয়া (২২), হাবিজুল (৩০) ও নওশের আলী (২৮) কিশোরীকে ধর্ষণ করে অচেতন অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়।
পরদিন ২ জুন সকালে কিশোরীর পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়। কিশোরীর মা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ সরকারের কাছে মেয়ে ধর্ষণের বিচার দাবি করেন। চেয়ারম্যান সুষ্ঠু বিচার এবং ধর্ষক জুয়েলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মামলা করতে বারণ করেন।
এদিকে এই সংবাদ জানাজানির পর জুয়েলসহ তার সহযোগীরা সবাই গা ঢাকা দেয়। গত ৩ জুন শুক্রবার কিশোরীর পরিবার মামলা করার জন্য ভুরুঙ্গামারী থানায় গেলে ওই ইউনিয়নের দুজন ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান ও সিদ্দিক আলী তাদের ধর্ষক জুয়েলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে মামলা না করে বাড়িতে ফেরত পাঠান।
৪ জুন শনিবার কিশোরী নিজে বাদী হয়ে ভুরুঙ্গামারী থানায় মামলা করে। এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, মেয়েটি গণধর্ষণের শিকার হয়নি। শুধু জুয়েল ধর্ষণ করেছে। বিয়ের কথা হওয়ায় ৩ জুন বাদী মামলা করেনি। বিষয়টির সমাধান না হওয়ায় শনিবার বিকেলে মামলা হয়েছে। ধর্ষিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আজ রোববার কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অজয় কুমার জানান, রোববার মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।