উন্নয়নের নামে পাহাড়ে ব্যবসা খুলে বসেছে এনজিওগুলো : প্রতিমন্ত্রী
পার্বত্য তিন জেলায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর (এনজিও) কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। এ সময় তিনি পাহাড়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথাও তুলে ধরেন।
আজ শনিবার বিকেলে বান্দরবানের রেইছা ইউনিয়নের দুর্গম হেবরনপাড়ায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরে তিনি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত উজিপাড়া বৌদ্ধ বিহারও উদ্বোধন করেন।
এনজিওগুলোর সমালোচনা করে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, সরকারের সঙ্গে কোনো সমন্বয় না করে এনজিওগুলো বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকার পরও গ্রামের মধ্যে ছোট্ট স্কুল ঘর করে স্থানীয়দের দু-একজনকে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে পাড়ার ছেলেমেয়েদের পাঠদান আরম্ভ করে দেন। দু-তিন বছর পর প্রকল্পের মেয়াদ শেষ বলে সবকিছু গুটিয়ে ফেলেন। ওই সময় বেকার হয়ে যান শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে শত শত ছাত্রছাত্রী। তখন দায়-দায়িত্ব নেওয়ার লোকও খুঁজে পাওয়া যায় না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের নামে নেওয়া কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের ৬০ ভাগ ব্যয় হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন এবং কার্যালয়ের খরচে। এনজিও সংস্থাগুলো পাহাড়ে উন্নয়নের নামে ব্যবসা খুলে বসেছে। এনজিও সংস্থার বন্ধ হওয়া স্কুলের দায়ভার সরকার নেবে না। উন্নয়ন সংস্থাগুলোকেই চালাতে হবে। যে সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর আরো বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের চিন্তা করে একমাত্র আওয়ামী লীগ। পার্বত্য শান্তিচুক্তি সম্পাদনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই পাহাড়ে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। পার্বত্যবাসী এখন শিক্ষা-দীক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছে। সরকারই দুর্গম অঞ্চলে রাস্তাঘাট, সেতু, শিক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নে আন্তরিক চেষ্টা চালাচ্ছে। এনজিও সংস্থাগুলো কাগজে-কলমে উন্নয়নের কথা বলে অনিয়ম-দুর্নীতি করছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বান্দরবান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ক্যসা প্রু মারমা, টিংটিং ম্যা মারমা, রেইছা ইউপির চেয়ারম্যান সাবুখয় মারমা, কুহালং ইউপির চেয়ারম্যান নাসু প্রু মারমা, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ কামরুজ্জামানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।