বান্দরবানে আ.লীগের মানববন্ধন, অপহৃত নেতার মুক্তি দাবি
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/06/23/photo-1466676742.jpg)
বান্দরবানে পাহাড়ে অপহরণ, চাঁদাবাজি বন্ধ এবং অপহৃত আওয়ামী লীগ নেতা মংপ্রু মারমার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগ।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রেসক্লাবের সামনে জেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো এ কর্মসূচি পালন করে।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচিতে পাহাড়ি-বাঙালি কয়েকশ নারী-পুরুষ ব্যানার-ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশ নেয়। দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষও কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়ে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর, যুগ্ম সম্পাদক লক্ষ্মী পদ দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যসাপ্রু মারমাসহ সংগঠনের নেতারা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যসাপ্রু মারমা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) অধিকার আদায়ের আন্দোলনে কথা বললেও তাদের সন্ত্রাসীরা পাহাড়ে অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। দেশের গণমাধ্যম এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খোঁজ নিয়ে দেখেন, পাহাড়ে অপহরণ, চাঁদাবাজির সঙ্গে কারা জড়িত। তিনি প্রশ্ন করেন, পার্বত্যাঞ্চলে সরকারি-বেসরকারি উন্নয়নকাজের ঠিকাদার, কাঠ ব্যবসায়ী এবং পাহাড়ে উৎপাদিত ফল বাগান মালিক, ক্রেতা-ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিবছর আদায় করা চাঁদাবাজির কোটি কোটি টাকা কোথায় যাচ্ছে?
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক লক্ষ্মী পদ দাশ বলেন, সন্ত্রাসীরা দেশের শত্রু। কিন্তু আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন জেএসএস পার্বত্য অঞ্চলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। সংগঠনটির সমিতির অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজির মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। পাহাড়ে বর্তমানে কেউই নিরাপদ নয়। অপহৃত আওয়ামী লীগ নেতাকে উদ্ধারে পার্বত্য অঞ্চলে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিশেষ অভিযান পরিচালনার দাবি জানান তিনি।
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘পাহাড়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কারা প্রশ্রয় দিচ্ছেন? কাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সন্ত্রাসীরা পাহাড়ে ত্রাস সৃষ্টি করছে, চিন্তাভাবনার করার সময় এসেছে। পার্বত্য অঞ্চল কারা নিয়ন্ত্রণ করছে অস্ত্রধারী জেএসএস সন্ত্রাসীরা, নাকি গণতান্ত্রিক সরকার এ প্রশ্ন এখন মানুষের মনে। যদি সরকার নিয়ন্ত্রক হয়, তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সন্ত্রাসী বাহিনীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না কেন?’
সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ১৩ জুন রাতে জেলার জামছড়ি পাড়া থেকে বান্দরবান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাবেক ইউপি সদস্য মংপ্রু মারমাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় অপহৃতের আত্মীয় হ্লামংচিং মারমা বাদী হয়ে জেএসএসের শীর্ষ নেতাদের নাম উল্লেখ করে বান্দরবান সদর থানায় ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। অপহরণের ঘটনায় ওই মামলায় পুলিশ জেলা জনসংহতি সমিতির যুগ্ম সম্পাদক উচচিং মারমা (৩৮) এবং জেএসএস নেত্রী মেহ্লাচিং মারমা (৩৫) নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে। অন্য শীর্ষ নেতারা পলাতক।
এর আগে অপহৃত নেতার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। দফায় দফায় সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি এবং বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছে ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীরা। প্রশাসন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসে আওয়ামী লীগ। বৈঠক শেষে প্রশাসনের আশ্বাসে গত রোববার সন্ধ্যায় অনির্দিষ্টকালের সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ। অপহৃতকে উদ্ধারে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্ভাব্য স্থানগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু অপহরণের ১১ দিনেও খোঁজ মেলেনি অপহৃত আওয়ামী লীগ নেতারা।