জেএসএসের ভয়ে গ্রামছাড়া শতাধিক পরিবার
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/07/10/photo-1468157361.jpg)
আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) ভয়ে পাহাড়ি গ্রাম ছেড়ে অনেক পরিবার জেলা শহরে অবস্থান নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ।
আজ রোববার সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনে অপহৃত আওয়ামী লীগ নেতা মংপ্রু মারমার অপহরণের প্রতিবাদ এবং পাহাড়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে এক মানববন্ধনে আওয়ামী নেতারা এ অভিযোগ করেন।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মানববন্ধন কর্মসূচিতে পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রাম থেকে পালিয়ে আসা পরিবারের সদস্যরা অংশ নেয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যসাপ্রু মারমা, রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হ্লাথুরী মারমা, যুবলীগ নেতা পাইলাঅং মারমা, সন্ত্রাসীদের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে আসা তালুকদার পাড়া কার্বারী (গ্রামপ্রধান) মংপু মারমা, মংপ্রু মারমা অপহরণ মামলার বাদী হ্লামংচিং মারমা প্রমুখ।
তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ওঠা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেএসএসের বক্তব্য জানতে চাইলেও কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। জানা গেছে, অপহরণ মামলায় আসামি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জেএসএস নেতাদের একটি বড় অংশই এখন মোবাইল ফোন রিসিভ করছেন না।
মানববন্ধন শেষে দুপুরে জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন গ্রাম থেকে শহরে পালিয়ে আসা আওয়ামী সমর্থকরা।
সভায় পাহাড়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোরালো দাবি ওঠে।
তালুকদারপাড়া কার্বারী (গ্রামপ্রধান) মংপু মারমা বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা এবং আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে তালুকদারপাড়া, তারাছা এবং জামছড়িপাড়া থেকে শতাধিক পাহাড়ি পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে জেলা সদরের আবাসিক হোটেলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি।’
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক লক্ষ্মীপদ দাস বলেন, আওয়ামী লীগকে পার্বত্যাঞ্চলে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা মংপ্রু মারমাকে অপহরণ করা হয়েছে। পাহাড়ে জেএসএস সন্ত্রাসীদের আতঙ্কে সাধারণ মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। চাঁদাবাজির টাকায় জেএসএস সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্রের মজুদ বাড়াচ্ছে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য।
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, অপহৃত আওয়ামী লীগ নেতা মংপ্রু মারমার কোনো খোঁজ ২৮ দিনেও পাওয়া যায়নি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে দাবি করলেও আসলে তারা ব্যর্থ হয়েছে।
জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ইউনিট স্থাপনের দাবি জানানো হয়।
সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২৩ জুন রাতে জেলার জামছড়িপাড়া থেকে বান্দরবান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মংপু মারমাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় অপহৃত নেতার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে দুই দফায় তিনদিন বান্দরবানে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু প্রশাসনের আশ্বাসে পরবর্তী সময়ে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।