১১ আসামিকে খালাসের স্থগিতাদেশ বাড়ল
গাজীপুরে শ্রমিক নেতা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের স্থগিতাদেশ আগামী রোববার পর্যন্ত বাড়িয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।
আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর আসামিপক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন।
গত ১৫ জুন আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ে ১১ জনকে খালাস দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ। রায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ অন্য ছয়জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন উচ্চ আদালত। বিচারিক আদালতে দণ্ড পাওয়া জীবিত ২৬ আসামির মধ্যে আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। আগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন পলাতক থাকায় তাঁর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত।
রায়ের ১১ জনকে খালাস দেওয়ার অংশের বিরুদ্ধে ২০ জুন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ২১ জুন শুনানি শেষে রায় স্থগিত করে আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত।
বিচারিক আদালতে খালাস পাওয়া ওই ১১ আসামি হলেন—আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, ফয়সাল (পলাতক), লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির (পলাতক), খোকন (পলাতক), দুলাল মিয়া, রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর ও মনির।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আটজনের মধ্যে সাতজনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ফাঁসির সাজা কমেছে। বাকি একজনের আগের সাজাই বহাল রয়েছে।
মারা যাওয়া দুই আসামির আপিলের নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত।
আর মামলাটির ৩০ আসামির মধ্যে দুজন বিচারিক আদালতেই খালাস পেয়েছিলেন।
চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ছয়জন হলেন—নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দিপু (পলাতক), মাহবুবুর রহমান মাহবুব, শহীদুল ইসলাম শিপু, হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ ও সোহাগ ওরফে সরু।
মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাতজন হলেন—মোহাম্মদ আলী, সৈয়দ আহমেদ হোসেন মজনু (পলাতক), আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু (পলাতক), রতন মিয়া ওরফে বড় রতন, ছোট জাহাঙ্গীর (পলাতক), আবু সালাম ওরফে সালাম ও মশিউর রহমান ওরফে মশু (পলাতক)।
যাবজ্জীবন বহাল থাকা আসামি হলেন নুরুল আমিন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অহিদুল ইসলাম টিপু পলাতক থাকায় তাঁর সাজার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত।
এ মামলায় নুরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ, ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও দুজনকে খালাস দিয়েছিলেন গাজীপুরের বিচারিক আদালত। দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২৮ জনের মধ্যে দুজন মারা যাওয়ায় তাঁদের আপিলের নিষ্পত্তি করে ২৬ জনের বিষয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।
২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এমএ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় আহসানউল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পরদিন আহসানউল্লাহ মাস্টারের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।