গাজীপুরে শিশু হত্যায় সৎমায়ের মৃত্যুদণ্ড
গাজীপুরের টঙ্গীতে মেয়েশিশুকে হত্যার দায়ে সৎমাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। একই সঙ্গে রায়ে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
দণ্ডাদেশ পাওয়া ওই নারীর নাম শাকিলা জাহান মরিয়ম ওরফে খুকি। তিনি বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানার শ্যামপুর গ্রামের আক্কাস আলী হাওলাদারের মেয়ে।
আজ রোববার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক এ আদেশ দেন। এ সময় আসামি শাকিলা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভেকেট হারিজ উদ্দিন আহমেদ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার কেরানীগঞ্জের অগ্রখোলা মোল্লাবাড়ি গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে মো. শফিউল আলম (সাগর) ১৮ বছর আগে টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকার নুরুল ইসলামের মেয়ে ফারজানা ইসলাম স্বপ্নাকে বিয়ে করেন। তাঁদের দাম্পত্য জীবনে সাদিয়া আলম জয়া (১৪) ও এহসানুল ইসলাম মাহিন (৮) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। তাঁরা টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকায় আমির হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সাত বছর আগে ফারজানাকে তালাক দেন শফিউল। এর পাঁচ বছর পর শাকিলা জাহান মরিয়ম ওরফে খুকিকে বিয়ে করে ওই বাড়িতেই বসবাস করতে থাকেন সফিউল। মেয়ে সাদিয়া আলম জয়া লেখাপড়ার সুবিধার্থে বাবা ও সৎমায়ের কাছে থাকত। বিষয়টি সৎমা শাকিলা মেনে নিতে পারেননি। গত বছরের ১১ জুন জয়াকে হাত, পা বেঁধে মেরে ফেলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন শাকিলা। গত বছরের ১৩ জুন স্বামী সফিউল ভোরে প্রাতর্ভ্রমণে বের হন। এ সময় শাকিলা বাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় সাদিয়াকে চাপাতি ও ছুরা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য বাথরুমে নিয়ে রাখেন।
এ ব্যাপারে নিহতের মা ফারজানা ইসলাম স্বপ্না বাদী হয়ে শাকিলাকে আসামি করে টঙ্গী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সৎমা শাকিলাকে গ্রেপ্তার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ওই হত্যা মামলায় আসামি সৎমা শাকিলা জাহান মরিয়ম ওরফে খুকি দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আজ রোববার গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আসামিকে ওই রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভেকেট হারিজ উদ্দিন আহম্মদ। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফাতেমা আক্তার জলি।