কাসেম আলীর আপিলের সারসংক্ষেপ জমার নির্দেশ

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আগামী ২০ মের মধ্যে আসামিপক্ষ এবং জমা দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে এ সারসংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।
আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
এ বিষয়ে মীর কাসেম আলীর আইনজীবী ব্যারিস্টার তানভীর আল আমিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা আপিল করার পর আদালত এ বিষয়ে সারসংক্ষেপ আগামী ২০ মের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষকেও এক সপ্তাহ পর জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
শুনানিতে আসামিপক্ষে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শাহজাহান ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর দেওয়া ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ৩০ নভেম্বর আপিল করেন মীর কাসেম আলী। এর আগে গত বছরের ২ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মীর কাসেম আলীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি শাহীনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়ার সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনাল-২।
তাঁর বিরুদ্ধে আনা ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয়েছে। বাকি চারটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারেনি প্রসিকিউশন।
২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। এর পর ১১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া সাক্ষ্যগ্রহণে রাষ্ট্রপক্ষে ২৪ জন এবং আসামিপক্ষে তিনজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ৪ মে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচারিক কাজ শেষ হয়।
এর আগে ২০১৩ সালের ৬ মে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৪টি অভিযোগে তদন্ত চূড়ান্ত করে তদন্ত সংস্থা প্রসিকিউশনের জমা দেয়। ১৬ মে প্রসিকিউশন টিম ১৪টি অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে। পরবর্তী সময়ে ২৬ মে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। এর পর ১৭ জুন মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল-১। ওই দিন বিকেলেই মতিঝিলে দৈনিক নয়া দিগন্ত কার্যালয়ের (দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশন) থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পরে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল-১।
পরে ৩০ সেপ্টেম্বর মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২-এ স্থানান্তর করা হয়।