গাজীপুরে স্কুলছাত্র হত্যার দায়ে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় স্কুলছাত্র হত্যার দায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক নারী ইউপি সদস্য ও তাঁর স্বামী, ভাইসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. ফজলে এলাহী ভূইয়া আজ মঙ্গলবার বিকেলে এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগুটিয়া গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম ও তাঁর ভাই আতিকুল ইসলাম, একই গ্রামের আনার হোসেন ও তাঁর ভাই আলম শেখ, সেলিম ও নয়ন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন ঘাগুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ারা বেগম, তাঁর স্বামী আবদুল মোতালেব ও ভাই শেখ সামসুদ্দিন। দণ্ডাদেশ পাওয়া সবাই পরস্পরের আত্মীয়।
গাজীপুর আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মকবুল হোসেন কাজল ও পুলিশের আদালত পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম মামলার বরাত দিয়ে জানান, কাপাসিয়ার ঘাগুটিয়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে সানাউল্লাহ সরকারের সঙ্গে আবদুল মোতালেব ও ইউপি সদস্য আনোয়ারা বেগমের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ দেখা যায়। সানাউল্লাহ ঘাগুটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ত। ২০০১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে সানাউল্লাহ বাড়ি থেকে রিকশায় করে পাশের নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার নারান্দী গ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে আসামিরা সানাউল্লাহকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরদিন সকালে স্থানীয় সিঙ্গুয়া ফকির সাহাব উদ্দিন বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে গলায় মাফলার পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই আসাদুজ্জামান ১০ ফেব্রুয়ারি কাপাসিয়া থানায় ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ১২ জনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩১ আগস্ট অভিযোগপত্র দেয়। মামলার বিচার চলাকালে তিন আসামির মৃত্যু হয়।
দীর্ঘ শুনানিকালে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আজ বিকেলে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. ফজলে এলাহী ভূইয়া মামলার ওই রায় দেন।