শহীদ মিনারে কবিকে কাল বিদায় জানাবে জাতি

কবি শহীদ কাদরীর মরদেহ আগামীকাল বুধবার ঢাকায় আসছে। প্রথমেই কবির মরদেহ রাখা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ ঢাকার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বাসসকে বলেন, ‘জোটের উদ্যোগে আগামীকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কবির মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেখানে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ সর্বস্তরের মানুষ কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে বুদ্ধিজীবী কবর স্থানে কবিকে দাফন করা হবে।’
এদিকে মরদেহ সকালে পৌঁছার পর কিছু সময়ের জন্য বারিধারায় কবির ভাইয়ের বাসায় নেওয়া হবে বলেও জানান গোলাম কুদ্দুছ।
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত আগ্রহে কবির মরদেহ বাংলাদেশে আনাসহ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানের সমন্বয় করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।’
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল বাসসকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে কবির মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করেছেন। সরকারী অর্থে নয়, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত খরচে কবির মরদেহ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্বদেশের মাটিতে আসছেন।
নিজের ফেসবুকে শাকিল লেখেন, ‘কবি শহীদ কাদরী আগামীকাল সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে দেশের মাটি ছোঁবেন। তিনি আসবেন এমিরেটস-এর ফ্লাইটে।’ এর আগে ভোর ৫টা ১০ মিনিটে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কবিপত্নী নীরা কাদরী এবং কবিপুত্র আদনান কাদরী ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন বলে জানান শাকিল।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কবিকে দাফনের জন্য বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও লেখেন শাকিল। প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ঢাকায় কবির জন্য শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফনসহ সব ব্যবস্থা নিয়েছেন।
বাংলা একাডেমির উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন আগামীকাল বেলা ১১টায় সদ্যপ্রয়াত কবি শহীদ কাদরীর মরদেহ বাংলা একাডেমিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে।
শহীদ কাদরী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। সম্পতি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন তিনি। অবশেষে গত রোববার নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে ৭৪ বয়সী এই কবি মারা যান।
১৯৭৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি এবং ২০১১ সালে তিনি একুশে পদক অর্জন করেন। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি এবং বাংলা একাডেমির সম্মানিত ফেলো।
‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘কোথাও কোন ক্রন্দন নেই’, ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ কবির অন্যতম চারটি কাব্যগ্রন্থ।