রাসিকের কর্মকর্তাকে পিটুনি, আ.লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/05/11/photo-1431364815.jpg)
মেয়রশূন্য রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক ওয়ালিদ হাসান মাহমুদ রানাকে তাঁর দপ্তরে পেটানো হয়েছে। কর্মচারী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগপন্থী কর্মচারীরা ওয়ালিদকে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় প্রশাসন শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী শমসের আলীকেও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনার পরপরই রাসিকের ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক ওয়ালিদ নিজ দপ্তর থেকে বের হয়ে নগরভবন ত্যাগ করেন। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাসিক হিসাবরক্ষণ বিভাগের এক কর্মচারী জানান, সম্প্রতি জুয়েল নামের এক মাস্টাররোল কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ছাঁটাই করা হয়। জুয়েল রাসিকের প্রশাসন শাখায় কর্মরত ছিলেন। কিন্তু জুয়েলের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়নি।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কর শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী আজমির আহমেদ মামুনের নেতৃত্বে কর্মচারী ইউনিয়নের কয়েকজন নেতাকর্মী জুয়েলকে সঙ্গে নিয়ে হিসাবরক্ষণ দপ্তরে যান। সেখানে আজমির কর্মচারী জুয়েলের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ওয়ালিদকে বলেন। এ সময় তহবিলে টাকা নেই বলে জানান ওয়ালিদ। এ নিয়ে ওয়ালিদের সঙ্গে আজমিরের কথাকাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে আজমিরের সঙ্গে থাকা কর্মচারী ইউনিয়নের কর্মীরা রানাকে মারধর করেন। এ সময় শমসের আলী এগিয়ে এলে তাঁকেও মারধর করা হয়।
এ ব্যাপারে রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজমির আহমেদ মামুন বলেন, ‘কর্মচারীদের বেতন বিল পরিশোধ করতে হিসাবরক্ষককে অনুরোধ করা হয়েছিল। এ সময় তিনি আমাদের ওপর চড়াও হয়ে তাঁর কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলে ধাক্কা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মচারীরা ওয়ালিদকে মারধর করেছেন।’
দেড় বছর ধরে আওয়ামী লীগপন্থী কর্মচারীদের বেতন বিল পরিশোধে গড়িমসি নিয়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেন আজমির।
আজমির আরো বলেন, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল মেয়র হওয়ার পর ওয়ালিদকে ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা করা হয়। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর রাসিকের আওয়ামী লীগপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বিল আটকে রাখতেন। বুলবুল আত্মগোপনে যাওয়ার পর থেকে হিসাবরক্ষক ওয়ালিদ রাসিকের অর্থ আর ব্যাংকে জমা দেননি। সব অর্থ তাঁর দপ্তরের আলমারিতে রাখেন। সে অর্থ পলাতক মেয়রের কাছে পাচার করে আসছেন তিনি।
আজমির অভিযোগ করেন, মেয়র বরখাস্ত হচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গত ৫ মে আত্মগোপনে থাকা মেয়রকে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে এসেছেন ওয়ালিদ এবং বিভিন্ন ফাইলপত্র নিয়ে গিয়ে সই করিয়েছেন।
এ ব্যাপারে রাসিকের ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক ওয়ালিদ হাসান মাহমুদ রানার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা যায়নি।
তবে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহার আলী বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নাশকতার চারটি মামলার অভিযোগপত্রে আসামি হওয়ার কারণে গত ৭ মে মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। গত জানুয়ারিতে নাশকতার মামলায় আসামি হলে মেয়র বুলবুল আত্মগোপনে চলে যান।