ছাত্রলীগ নেতা নিহত, ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ

টাঙ্গাইলে মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত আবু সাদাত খালেদ মোশারফের (২৪) মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার বেলা বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অন্য দুই ছাত্রকে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। কাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শামসুল হক শিবলী।urgentPhoto
রাজনীতিমুক্ত ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি না থাকলেও নিহত খালেদ মোশারফ নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি পরিচয় দিতেন। খালেদ মোশারফ বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ তত্ত্ব ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মুজাপট্টি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামের ছেলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ আছে। একটি পক্ষে ছিলেন মোশারফ। অন্যপক্ষে মনির। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটত। আজ বেলা ৩টার দিকে মোশারফ ও তাঁর কর্মীরা ক্যাম্পাসে ঢুকলে মনির পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। মনিরের পক্ষের লোকজন মোশারফ ও তাঁর সহযোগী ফয়সালকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। হামলা শেষে মনির পক্ষের লোকজন চলে যায়। এ ঘটনায় মোশারফ, ফয়সাল, রাশেদুল ইসলাম বাঁধনসহ ১০ জন আহত হন। এর মধ্যে প্রথম তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তিনজনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার উদ্দেশে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে আহত মোশারফকে সাভারে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক গৌতম ঘোষ তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত অন্য দুই শিক্ষার্থীকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়।
নিহত মোশারফের মাথায়, পায়ে ও হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের গুরুতর চিহ্ন রয়েছে।
টাঙ্গাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রাণবন্ধু দে সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করছেন।
মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খাদেমুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মোশারফ ও মনির পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। এর রেশ ধরে আজ বেলা ৩টার দিকে এ দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে মোশারফ, ফয়সাল আহম্মেদ ও রাশেদুল ইসলাম আহত হন। তাঁদের প্রথমে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পুলিশ এসে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।