সহপাঠীদের প্রচেষ্টায় বন্ধ হলো বাল্যবিবাহ
হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল এক প্রবাসীর সঙ্গে। বিয়ের দিনও ঠিক হয়েছিল। অবশেষে সহপাঠী শিক্ষার্থীর প্রতিবাদে বন্ধ হলো এ বিয়ে।
সহপাঠীরা ক্লাস শিক্ষকের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক বিষয়টি স্থানীয় আখাইলকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে জানান। পরে সম্মিলিত উদ্যেগে বাল্যবিবাহ থেকে রেহাই মিলে ওই কিশোরী শিক্ষার্থীর।
জানা যায়, মৌলভীবাজার শহরের হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তার পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যের এক প্রবাসীর সঙ্গে আগামী ৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিবাহের দিন ঠিক করা হয়। ক্লাসে নিয়মিত অংশ নেওয়া সহপাঠী গত তিন-চারদিন থেকে হঠাৎ করে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিলে তারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর বিষয়টি জানা যায়। তার সহপাঠীরা জানায় স্কুলে আসা বন্ধ করার আগে স্কুলে এলেও আগের মতো সে সবার সঙ্গে মিশত কম। সে ক্লাসে এলেও পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে পড়ে। বিয়ের বিষয়টি লজ্জায় তার সহপাঠী সবাইকে বলেনি। তারপরও তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহপাঠীর মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন শ্রেণিশিক্ষক মাধুরী মজুমদার। তিনি জানান, স্কুলছাত্রী লেখা পড়ায় ছিল মনোযোগী। কিন্তু গেল কয়েকদিন থেকে সে অন্যমনস্ক ছিল।
মাধুরী মজমুদার বলেন, ‘বিষয়টি অবগত হয়ে আমি প্রধান শিক্ষিকা ম্যাডামকে জানাই। এরপর সবার আন্তরিক সহযোগিতায় বন্ধ হয় এই বাল্যবিবাহ।’
হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা বেগম জানান, ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের মাধ্যমে তার বিয়ের বিষয়টি জেনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি এই বাল্যবিবাহ রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। তিনি জানান, এর আগে গেল ২ ডিসেম্বর একইভাবে তার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির একটি মেয়ের প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ের দিন ঠিক হলে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় ওই বাল্যবিবাহ রোধ করতে সক্ষম হন।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্ঠায় পর পর দুটি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর পরিবারকে এনে সতর্ক করে বাল্যবিবাহর ক্ষতিকর দিকগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।