পিলখানা ট্র্যাজেডির শহীদদের প্রতি তিন বাহিনীর প্রধানের শ্রদ্ধা
পিলখানা ট্র্যাজেডির শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন তিন বাহিনীর প্রধান। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বনানীতে সামরিক কবরস্থানে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান তাঁরা। শ্রদ্ধা জানানোর পর শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল এবং বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান।
বিজিবিসূত্রে জানা যায়, পিলখানা ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণে আজ কর্মসূচি পালন করবে বিজিবি। পিলখানায় সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে শহীদদের স্মরণে আজ শাহাদত বার্ষিকী পালন করা হবে।
দিনটি পালন উপলক্ষ্যে বিজিবির সব স্থাপনায় বাহিনীর পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং বিজিবির সব সদস্য কালো ব্যাজ পরিধান করবে। এ ছাড়া বিজিবির সব সেক্টর ও ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হবে।
বিজিবি আরও জানায়, শুক্রবার বাদ জুমা পিলখানা বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা সেক্টর মসজিদ এবং বর্ডার গার্ড হাসপাতাল মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া শহীদদের রুহের মাগফেরাতের জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরসহ সব রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় খতমে কোরআন করা হবে। বিজিবির সব মসজিদ এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
২০০৯ সালে তৎকালীন বিডিআর সপ্তাহ চলাকালে ২৫ ফেব্রুয়ারি সশস্ত্র বিদ্রোহ করেন বাহিনীর কয়েকশ সদস্য। তাঁদের হাতে পিলখানা সদর দপ্তরে নিহত হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন।
পরে সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহীদের আলোচনা শেষে পর দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র, গুলি ও গ্রেনেড জমাদানের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহের সমাপ্তি হয়।
ঘটনার জেটপাট ও বিদ্রোহের এ ঘটনায় মোট ৫৮টি মামলা দায়ের করা হয়। হত্যার এক মামলায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া আধাসামরিক বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) নাম বদলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাখা হয়।
এ ঘটনায় নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টু, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অন্য দিকে, বিদ্রোহের জন্য দায়ের করা ৫৭ মামলায় বিডিআরের মোট পাঁচ হাজার ৯২৬ জন সদস্যের বিভিন্ন মেয়াদে (চার মাস থেকে সাত বছর) কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি বহুল আলোচিত পিলখানা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। রায় প্রদানকারী তিন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার এ রায়টি প্রকাশ করা হয়।
রায়ের দৈর্ঘ্য এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ রায়।