আলহাজ্ব মোসাদ্দেক আলীর বিরুদ্ধে টিন আত্মসাতের মিথ্যা মামলা বাতিল
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/05/25/alhaj_mosaddek_ali.jpg)
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা, সাবেক সংসদ সদস্য, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, ইন্টারন্যাশনাল টেলিভিশন চ্যানেল লিমিটেডের (এনটিভি) প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলীর বিরুদ্ধে সরকারি ত্রাণের টিন আত্মসাতের মিথ্যা মামলা বাতিল করে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় বহাল রাখা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রিভিউ খারিজ করে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ মে) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এ মামলায় বেঞ্চের অপর বিচারপতিরা হলেন—বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।
আদালতে আলহাজ্ব মোসাদ্দেক আলীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফজলুর রহমান খান।
রায়ের পর ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল আজ এনটিভি অনলাইনকে জানান, আলহাজ্ব মোসাদ্দেক আলীর বিরুদ্ধে ওয়ান ইলেভেনের (১/১১) সময় ফৌজদারী মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় অভিযোগে বলা হয়, তিনি সরকারি ত্রাণের টিন আত্মসাৎ করেছেন। পরবর্তীতে এই মামলায় দুদক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আমরা এই প্রসেডিংকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলাম। হাইকোর্ট দেখেছেন, এই অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। এজন্য ২০১৮ সালে মামলা বাতিল করে হাইকোর্ট রায় দেন এবং মামলার যাবতীয় কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করেন।
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল আরও জানান, ২০১৮ সালের রায়ের পর এই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক লিভ টু আপিল করে। ২০২১ সালের ২ জুন সেটাও বাতিল হয়ে যায়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে রিভিউ পিটিশন করেছিল দুদক। আজ মাননীয় প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রিভিউটি খারিজ করে দেন।
এই আইনজীবী বলেন, ‘আজকের আদেশের পরে এই মামলার আর কোনো বিচারিক কার্যক্রম অবশিষ্ট রইল না। আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী এই মামলাটিতে চূড়ান্তভাবে খালাসপ্রাপ্ত হলেন।’
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের মার্চে দুদক রাজধানীর তেজগাঁও থানায় আলহাজ্ব মোসাদ্দেক আলীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে এই মামলাটি করে। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ১০০ বান্ডেল সরকারি ত্রাণের ঢেউটিন আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এরপর ২০০৮ সালে মামলাটি বিচারিক আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ওই অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আলহাজ্ব মোসাদ্দেক আলী। সেই আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৭ মার্চ হাইকোর্ট মামলা বাতিল ঘোষণা করেন।
তৎকালীন হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি শহিদুল করিম রায়ে উল্লেখ করেন, আবেদনকারী আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তেঁজগাও শিল্প অঞ্চল থানায় করা বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪০৯/৪০৬/ ৪২০/৪৭১ এবং ১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুদক আইনের ৫(২), ১৫ ও ১৯ (১) ধারার মামলাটির রুল নিষ্পত্তি করে বাতিল ঘোষণা করা হলো।
হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের পক্ষ থেকে আপিল দায়ের করা হয়। ওই আপিলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০২১ সালের ২ জুন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহবুব হোসেনের নেত্বত্বে আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল গ্রহণ করার মতো কোনো যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই হাইকোর্টের রায়টি বহাল রাখা হলো। আপিল বিভাগ ২০২১ সালে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে দুদক।
আজ বৃহস্পতিবার রিভিউও খারিজ করেন আদালত। এতে করে এই মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলো।