মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন কথিত স্ত্রীর ছেলে
হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার নারীর ছেলে আব্দুর রহমান। আজ মঙ্গলবার (৬ জুন) সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি। এদিন সাংবাদিক এনামুল হক বিদ্যুৎও সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এ নিয়ে এই মামলায় পুলিশ, হোটেল কর্মচারী, প্রত্যক্ষদর্শীসহ মোট ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আদালতে এই দুই সাক্ষী বলেন, ‘গত বছরের ৩ এপ্রিল মাওলানা মামুনুল হক জান্নাত আরা ঝর্ণাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রয়্যাল রিসোর্টে নিয়ে আসেন। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ তাঁদের আটক করে। পরে জান্নাত আরা ঝর্ণা তাদের উপস্থিতিতে পুলিশের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রাকিব উদ্দিন জানান, এই মামলায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মোট ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ নির্যাতনের শিকার নারীর ছেলে ও এক প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মামুনুল হককে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩ এপ্রিল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়্যাল রিসোর্টের একটি কক্ষে এক নারীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাসহ স্থানীয় লোকজন। তখন ওই নারীকে নিজের বিবাহিত দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন তিনি। ঘটনা জানাজানি হলে সন্ধ্যায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা ওই রিসোর্ট ঘেরাও করে। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত থাকা অবস্থায় মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। পরে রাতভর সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে উত্তেজিত হেফাজত কর্মীরা। ওই ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়।
ঘটনার প্রায় মাসখানেক পর ৩০ এপ্রিল মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তাঁর দাবি করা দ্বিতীয় স্ত্রী ধর্ষণের মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, বিয়ের প্রলোভনে তাঁকে একাধিকবারস ধর্ষণ করেছেন মাওলানা মামুনুল হক। তাঁদের আইনত বিয়ে হয়নি। এই মামলায় গত ৩ নভেম্বর আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর আগে ১৮ এপ্রিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতনেতা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে।