টেকনাফে অপহরণচক্রের ৯ সদস্য আটক, তিন রোহিঙ্গা শিশু-কিশোর উদ্ধার

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নয় রোহিঙ্গা শিশু-কিশোরকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে মানবপাচারচক্রের নয় সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে অপহৃত তিন শিশু-কিশোরকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপর ছয় কিশোরকে উদ্ধার ও চক্রের অন্য সদস্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আজ রোববার (৯ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়াস্থ ৮ এপিবিএনের (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) সহকারি পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ।
উদ্ধার শিশু-কিশোররা হলো রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৩ এর ইলিয়াসের ছেলে সৈয়দ নুর, একই ক্যাম্পের সোনা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হাসান ও মো. তাহেরের ছেলে আনিসুর রহমান। আটকরা হলেন—নুরুল আমিন, মো. ফয়সাল, মো. শফিকুল, সাইফুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, আব্দুর রহমান, মোহাম্মদ পারভেজ। তারা সবাই টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দা। এছাড়া মো. মোবারক ও মো. আমিন উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
অপরদিকে এখনও হদিস মেলেনি অপহৃত নুর আলম, সৈয়দুল মোস্তফা, ওসমান, রিমন, কামাল মোস্তফা ও হারেছ নামে শিশুদের।
সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, গত ২ জুলাই একটি অপরাধীচক্র টেকনাফে সুপারিপাড়া ও গাড়িতে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৩ থেকে মোহাম্মদ হাসান, আনিসুর রহমান ও নুর আলমকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তাদের আটকে রেখে স্বজনদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করা হয়।
এরপর গত ৬ জুলাই একই অপরাধীচক্র একই কায়দায় ক্যাম্প-১৩ ও আশপাশের এলাকা থেকে সৈয়দ নূর, সৈয়দুল মোস্তফা, ওসমান, রিমন, কামাল মোস্তফা ও হারেছকে অপহরণ করে টেকনাফ নিয়ে যায়।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, অপহরণের বিষয়টি অবগত হওয়ার পর শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে টেকনাফের দক্ষিণ লম্বরিপাড়া দুর্গম স্থানের সুপারি বাগানের ভেতরে একটি বাড়ি থেকে অপহৃত রোহিঙ্গা তিন শিশু ও কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে উখিয়ার কুতুপালং এবং টেকনাফ থানাধীন দক্ষিণ লম্বরি এলাকার বিভিন্ন দুর্গম স্থানে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের ৯ সদস্যকে আটক করা হয়। এই ৯ জনের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা সাত জন ও রোহিঙ্গা দুজন।
ফারুক আহমেদ আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাজের প্রলোভনে টেকনাফ এলাকায় বিশেষ করে দক্ষিণ লম্বরি এলাকায় সুপারি বাগানের ভেতরে নির্জন স্থানে আটক রাখে। পরে তাদের চোরাইপথে নৌকাযোগে মিয়ানমারের শামিলা এলাকায় পাঠিয়ে দেয়। তারপর অপহৃতদের স্বজনদের কাছে বড় অংকের টাকা আদায় করে মুক্তি দেয়। অনেক সময় এই অপরাধ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে।