আদালতপাড়ায় বিএনপি ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীর হাতাহাতি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের দুর্নীতি মামলার রায়কে ঘিরে আদালতপাড়ায় বিএনপি ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার (২ আগস্ট) দুপুরে রায়কে ঘিরে আদালতের নিচে বটতলায় বিক্ষোভ মিছিলের সময় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। অপরদিকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে আদালতের এজলাস কক্ষের সামনে ও ভেতরে অবস্থান নিয়েছে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। তারাও বিভিন্ন স্লোগানে আদালতের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তবে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজ বুধবার (২ আগস্ট) দিন ধার্য রয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আসাদুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন। গত ২৭ জুলাই আদালত এ মামলার যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার তদারকি অফিসার পুলিশ পরিদর্শক ফারুকুল ইসলাম বলেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রায় ঘিরে যেকোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, আদালত প্রাঙ্গণে কড়া পাহারায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আদালত প্রাঙ্গণের আশপাশের মোড়গুলোতেও পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। পুলিশের দাবি, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তাদের এ অবস্থান।
আদালতের নথি থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১ নভেম্বর তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বর্তমানে তারা পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, ডা. জোবায়দা রহমান ও তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। এরপর ২০০৮ সালে এই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
এদিকে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ডা. জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। তবে, এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই মামলায় আট সপ্তাহের মধ্যে জোবায়দাকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ টু আপিল করেন ডা. জোবায়দা। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ টু আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখেন।