চাকরির কথা বলে ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!
বিদ্যালয় উন্নয়নের জন্য ১৭ লাখ টাকায় দুই কর্মচারী নিয়োগ এবং আরও দুজনকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। চিকনাই উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সোবহান প্রামাণিকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আর তা দাখিল করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি)।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের অভিযোগ, চিকনাই উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে আব্দুস সোবহান প্রামানিক অযাচিত হস্তক্ষেপ করে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টসহ কমিটির অন্য সদস্যদের কোনো মতামত না নিয়ে নিজের খেয়ালখুশি মতো প্রভাব বিস্তার করছেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি জোরপূর্বক কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে ১১ লাখ ও আয়া পদে ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন। অথচ এই টাকা বিদ্যালয়ের তহবিলে জমা করেননি।
অন্যদিকে, অফিস সহায়ক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে আরও দুজনের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নিছেন। এমন অনৈতিক কারণে গত ২৯ আগস্ট পরিচালনা কমিটি এক জরুরি সভা আহ্বান করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিলুফা পারভীন। ওই সভায় ১১ সদস্যের মধ্যে দাতা সদস্য হাবিবুর রহমান, অভিভাবক সদস্য আব্দুল মজিদ, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য লিলা খাতুন, শিক্ষক প্রতিনিধি মোকবুল হোসেন, হাবিবুর রহমান, রাবেয়া খাতুন, সদস্য সচিব নিলুফা পারভীন পদত্যাগ করেন।
শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় ১০ সেপ্টেম্বর সকালে স্কুলে আসার সময়ে সভাপতি আব্দুস সোবহান প্রামানিক লোকজনসহ আমার পথ আটকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আমি চাটমোহর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।’
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিলুফা পারভীন বলেন, ‘সভাপতি অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতাসহ তার বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডে আমরা শিক্ষক, অভিভাবক ও কর্মচারীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। বিধি অনুযায়ী ১১ সদস্যের মধ্যে সাতজন পদত্যাগ করায় কমিটি বিলুপ্ত করে এডহক কমিটির আবেদন করেছি। নিয়োগ দিয়ে উন্নয়নের নামে প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিলেও সে টাকার কোনো কাজ করা বা তহবিলে জমা করেননি। পুরোটাই আত্মসাৎ করেছেন। চাকরি দেওয়ার নামে আরও দুজনের কাছ থেকে অগ্রিম ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন। এই অনিয়ম ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবী করছি।’
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সোবহান প্রামানিকের বক্তব্যের জন্য একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তিনি বারবার সংযোগ কেটে দেন। পরবর্তীতে মুঠোফোন বন্ধ করে দেন।
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেদুয়ানুল হালিম বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’