বিএনপি দেশকে বেনিয়াদের হাতে তুলে দিতে চায়, অভিযোগ আওয়ামী লীগনেতাদের

নির্বাচন ঠেকিয়ে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করে বিএনপি বাংলাদেশকে বিশ্ব বেনিয়াদের হাতে তুলে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। দেশ বাঁচাতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে রাজপথ দখলে রাখার শপথ নিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তারা। আজ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মাদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন নেতারা।
সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের আগামী দিনগুলোতে অতন্দ্র প্রহরীর মতো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত সাফল্যের সুরক্ষা দেয়ার শপথ নিতে হবে।’
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বিএনপিকে ছোট করে দেখা ঠিক হবে না। বিএনপির সঙ্গে আরেকটা দল আছে,, আমি ভালো করে চিনি জামায়াত। সুতরাং, আমাদের লড়াই দুই শক্তির বিরুদ্ধে।’
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘শেখ হাসিনা ছিলেন বলেই বাংলাদেশের মানুষ আজকে অনেক কিছু পেয়েছে। নেতাকর্মীদের বলছি আগামী নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেই নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যাকেই মনোনয়ন দিক তার পক্ষে কাজ করতে হবে।’
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ফারুক খান বলেন, ‘দেশে-বিদেশে যারা এখন ষড়যন্ত্র করছে তারা ’৭১ এ ভয় দেখিয়েছিলো সপ্তম নৌবহর পাঠাবে বলে। আজও একইভাবে ভয় দেখাচ্ছে। আগামী নির্বাচনে দেশবাসীকে সুসংগঠিত করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ। এজন্য জাতিসংঘ থেকে দুটি পুরস্কার পেয়েছেন শেখ হাসিনা। প্রায় ২১টির মতো পদক তার অর্জনের সাফল্য স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন। জাতি হিসেবে তিনি আমাদের মর্যাদা অনেক ওপরে তুলেছেন।’
শাজাহান খান বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত খেলায় পারবে না। এই বিএনপি-জামায়াত বিজয় লাভ করতে পারবে না। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার জন্য আপামর জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাজ হবে ঘরে ঘরে গিয়ে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেওয়া।’
বিএনপির আল্টিমেটামের সমালোচনা করে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রেতাত্মা হয়ে বিএনপি-জামায়াত শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করতে চায়। আর বারবার দফা দেয়, এই দফার কোনো শেষ নেই।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘উন্নয়ন ব্যাহত করার জন্য জাতীয় ও আন্তার্জাতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়, দেশকে পেছনে নিয়ে যেতে চায়। তাই শপথ নিতে হবে সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়ে নৌকাকে আবারও নির্বাচিত করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে হবে।’
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘শেখ হাসিনা একদিকে ভোট ভাতের সংগ্রাম করেছেন, আরেকদিকে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। সেই সময়ে কারফিউ দিয়ে মানুষের টুঁটি চেপে রেখেছিল। সেই বাংলাদেশ কঠিন এক বাংলাদেশ। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে দেশের এই কোনা থেকে ওই কোনায় চষে বেড়িয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই ক্যান্টনমেন্ট থেকে গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছিল।’
আবদুর রহমান বলেন, ‘যতো বড় বিশ্ব মোড়ল হোক না কেন, বঙ্গবন্ধুর মতো তার মেয়েও এদেশের এক ইঞ্চি মাটিও অন্যের কাছে বন্ধক রাখবে না। মেঘ কেটে যাবে। সূর্য উঠবে শিগগিরই। আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন নানা ষড়যন্ত্র। বিএনপি চায় বেনিয়াদের হাতে এই দেশকে তুলে দিতে আর তারা চায় এদেশে তাবেদার সরকার কায়েম করতে।’
আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আজকে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের একটিই উদ্দেশ্য, তা হলো শেখ হাসিনাকে নিঃশেষ করা। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র। সেটা হবে না।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়া সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্রাহ হিরু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দলের উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।