ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে যাতায়াতের জন্য ভাড়া দেওয়ায় মানিকগঞ্জে ১৫টি বাসের কাগজপত্র ও চাবি জব্দ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগসমর্থিত জেলা পরিবহণ মালিক সমিতির নেতাদের নির্দেশে এসব বাসের চাবি ও কাগজপত্র জব্দ করা হয় বলে অভিযোগ তাদের।

গতকাল সোমবার রাতে এবং আজ মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপু‌রে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শুভযাত্রা পরিবহণের এসব বাসের কাগজ ও চাবি জব্দ করা হয়। আজ বি‌কে‌লে ওই পরিবহণের বাসের বেশ কয়েকজন চালক, শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে। তাঁরা বলছেন, কারা কোন দল করেন, তা তাঁদের দেখার বিষয় নয়। গাড়ির চাকা না ঘুরলে তাঁদের সংসার চলে না।

শুভযাত্রা পরিবহণের বাসগুলো মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকার গুলিস্তানে যাত্রী পরিবহণ করে থাকে।

জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর নয়াপল্টনে গতকাল জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সমাবেশ ছিল। সরকারে পদত্যাগের এক দফা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে এ সমাবেশ করা হয়।

ওই সমাবেশে মানিকগঞ্জ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের যাতায়াতের জন্য বিভিন্ন পরিবহণের ৩০ থেকে ৩৫টি বাস ভাড়া করে জেলা বিএনপি। এর মধ্যে শুভযাত্রা পরিবহণের প্রায় ১৫টি বাস ছিল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চালক ও মালিকপক্ষের কয়েকজন অভিযোগ করেন, বিএনপির কর্মসূচিতে দলটির জেলার নেতাকর্মীদের যাতায়াতের জন্য বাস ভাড়া দেওয়ায় গাড়ির চাবি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোর করে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামের নির্দেশে তাঁর অনুসারীরা এসব করেছেন। বিষয়টি কাউকে না জানাতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও আছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

এক চালক বলেন, গতকাল ওই কর্মসূচি থেকে রাত ১০টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসার পর বাসের চাবি ছিনিয়ে নেন জাহিদুল ইসলামের লোকজন। আজ সকালে তাঁরা পুলিশের নাম করে গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে যান।

শুভযাত্রা পরিবহণের একটি বাসের মালিক কাইয়ুম হোসেন বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচিতে গাড়ি ভাড়া দেওয়া যাবে না, এ বিষয়ে আমাদের আগে তো বলা হয়নি। তা ছাড়া আমরা সাধারণ মালিক। বাসের চাকা ঘুরলে আমাদের জীবন চলে। আমরা তো কোনো দল করি না।’

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনায় মনে হচ্ছে, আমরা বর্বর যুগে ফিরে যাচ্ছি। এ ধরনের ঘটনা গণতান্ত্রিক রাজনীতি চর্চা নয়। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

অভিযোগের বিষয়ে মানিকগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জ ফিরে বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে দেখব।’

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ সরকার বলেন, ‘বাসের চাবি ও কাগজপত্র নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।’