অব্যাহত ভারি বর্ষণে শহরে জলাবদ্ধতা, তলিয়ে গেছে ফসল
অব্যাহত ভারি বর্ষণে নাটোর শহরের বেশির ভাগ এলাকায় দেখা দেয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। পানিতে তলিয়ে যায় শহরের ব্যস্ততম কানাইখালী, নিচাবাজার, চৌকিরপাড়, কালুর মোড়, আলাইপুরসহ বিভিন্ন এলাকা। বিপণিবিতান, বাজার, আবাসিক এলাকাসহ সব স্থানে থৈ থৈ পানি। বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় চরম দুর্ভোগে সব শ্রেণির মানুষ। এই চিত্র ছিল গতকাল বৃহস্পতিবারের। আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকালেও শহরের নিচু এলাকায় পানি জমে আছে।
ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গতকাল বিকেলে শহরের কালুর মোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। সন্ধ্যায় পুলিশ ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মলয় কুমার পানি নিস্কাশনের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। পরে ভুক্তভুগী এলাকাবাসী নিজেরাই ভরাট হয়ে যাওয়া খাল সংস্কার করে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করেন। পৌর এলাকার ভঙ্গুর ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও খালগুলো দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ শুরু করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। আর ভারি বৃষ্টিপাত না হলে আগামিকাল (আজ) এস্কাভেটর দিয়ে দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়া খাল ও ড্রেনগুলো সংস্কার করে পানি অপসারণের ব্যবস্থা করা হবে। একই সঙ্গে সরকারি খালের জায়গা নির্ধারণ করে তা উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিলের অন্তত দেড় হাজার হেক্টর জমির আমন ধান তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, সিংড়ার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে চলনবিলের অভ্যন্তরে থাকা আটটি ইউনিয়নের এক হাজার ৩২০ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৩৩০ হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছাতারদীঘি ইউনিয়ন। এখানকার প্রায় ৪০০ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়েছে এক হাজার ৭০০ কৃষক। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে চলনবিল অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বেড়ে ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। নতুন করে বৃষ্টি না হলে এবং পানি বের হয়ে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে বলে জানিয়েছেন সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার ফরিদ।