এক অন্যরকম লঞ্চ ঘাট
রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। পানিপথে রাজধানী থেকে দেশের যেকোনো অঞ্চলে যেতে হলে এই লঞ্চ ঘাটে যেতেই হবে আপনাকে। অনেক জেলা বা চর আছে, যেখানে পানিপথেই যেতে পছন্দ করেন যাত্রীরা। এসব এলাকায় যেতে রাজধানী ছাড়তে হয় এই সদরঘাটের ঐতিহ্যবাহী ঘাট দিয়েই। তাই যাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে ঘাটটি। তবে, আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সেখানে গিয়ে মিলল অন্যরকম দৃশ্য। ছিল না চিরচায়িত যাত্রীদের ভিড়।
আজ সরেজমিন দেখা যায়, সদরঘাটে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পার করছিলেন অলস সময়। গোল হেয়ে বসে তাস খেলে সময় পার করছিলেন সেখানের অনেক শ্রমিক। বেচাকেনা কম থাকায় সেখানকার বিভিন্ন ধরনের দোকানিদেরও অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে।
আর যেসব যাত্রী লঞ্চ ভ্রমণ করবেন বলে সদরঘাটে এসেছিলেন তাদেরও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এর মূলে রয়েছে বিরোধীদগুলোর ডাকা অবরোধ।
ঘাট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবরোধের কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে ঘাটে কম লঞ্চ এসেছে। ঢাকা থেকেও আগের মতো ছাড়ছে না এই নৌযান। নেই যাত্রীদের ভিড়ও।
চাঁদপুরে যাওয়ার জন্য আজ দুপুর ১টার দিকে লঞ্চঘাটে আসেন রহিমা খাতুন। এসে জানতে পারেন, কখন লঞ্চ ছাড়বে কেউ জানেন না। রহিমা খাতুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘জানতে চাইছি, বলল যাত্রী নেই। যাত্রী এলে তারপর ছাড়বে। কিন্তু, কখন ছাড়বে জানায়নি। কতক্ষণ বসে থাকতে হবে, জানি না।’
রহিমা খাতুন যখন এ কথা বলছিলেন তখন লঞ্চ ঘাটের একটি গেটে দেখা যায় কয়েকজন শ্রমিককে তাস খেলছে। তাস খেলতে খেলতে ফরিদুর রহমান নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘কুলির কাজ করি। কিন্তু, এখন কোনো যাত্রী নেই। তাই খেলা করে সময় পার করছি।’
লঞ্চ ঘাটে কমলালেবু আর আপেল বিক্রি করেন নাজমুল রহমান নামের এক বিক্রেতা। কথা প্রসঙ্গে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘লোকজন নেই। বেচাকেনাও নেই। সারাদিনে দুই কেজি আপেল আর এক কেজি কমলা বিক্রি করছি। কাল পরশু এখনও দুদিন আবরোধ রয়েছে। জানি না, সামনে কী হয়।’
ঢাকা নদী বন্দরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. বেলায়েত হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সারা দেশ থেকে ঢাকায় কম লঞ্চ ঢুকছে। আবার ঢাকা থেকেও কম লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এ ছাড়া যেসব লঞ্চ ঢাকা থেকে গেছে বা ঢাকায় এসেছে, সব লঞ্চেই যাত্রী কম ছিল।’
মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আজ ভোর থেকে দুপুর আড়াটা পর্যন্ত ঢাকা থেকে মোট ১৩টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে সারা দেশের উদ্দেশে। আর একই সময় পর্যন্ত সারা দেশকে থেকে ঢাকায় ঢুকেছে ৪৩টি। ভোর থেকে এসব লঞ্চগুলো চাঁদপুর, নড়িয়া, ইলিশা, মৃদার হাট, হাটুরিয়া, মতলব ও নরসিংহপুর থেকে ঢাকায় এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে গেছে।’