অসাধু চক্রের রাজনৈতিক পরিচয় যা-ই হোক ছাড় নয় : বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘বৈশ্বিক কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ে ভীষণ দুঃসময় পার করতে হচ্ছে। এর মধ্যেই বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে অসাধু চক্র। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যা-ই হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর মালিবাগে পিডব্লিউডি কলোনি অডিটোরিয়ামে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, ‘সরকার গরিব-দুঃখী, অসহায় মানুষকে, যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন তাদের কথা বিবেচনা করে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড অর্থাৎ পাঁচ কোটি মানুষকে কম মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে, তার চেয়েও বেশি মানুষকে সরকার ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডিম ও আলু আমদানি শুরু হওয়ায় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ডিমের একটি চালান দেশে আসার পর সরকার থেকে যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, তার চেয়ে কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি আলু-পেঁয়াজসহ অন্যান্য শাক-সবজির বাজার স্বাভাবিক হবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম নির্ভর করে দেশের উৎপাদনে ওপর। এখন পেঁয়াজের শেষ সময়। আমরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে ঘাটতি পূরণ করে থাকি। কিন্তু, ভারত রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে প্রথমে ৪০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করে। এর কিছুদিন পরেই প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে, যাতে করে আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে বাজারে দাম বেশি।’
ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ার পরেও চালান আসতে দেরি হওয়া প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন, ‘ডিম আমদানির ক্ষেত্রে আমরা বেশ কয়কটি শর্ত দিয়েছিলাম, বিশেষ করে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা সনদ নিতে হবে। এসব শর্তপূরণে কিছু আইনি জটিলতা থাকায় দেশে চালান আসতে দেরি হয়েছে।’
টিপু মুনশি আরও বলেন, ‘ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নিচ্ছে এবং মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দেশের মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে হবে এবং আমরা সে চেষ্টাই করে যাচ্ছি।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত করায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি অসামঞ্জস্যতা দূর হবে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সারা দেশে বিনামূল্যে এই স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে।’
কার্ড পেতে কার্ডধারীদের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এ সময় টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মামুন রশিদ শুভ্র উপস্থিত ছিলেন।