‘ভাতের হোটেল’ নিয়ে যা বললেন ডিবি হারুন
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে কয়েক মাস আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে মধ্যাহ্নভোজ করান। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচনায় ‘ভাতের হোটেল’ নিয়ে হয় মিম (হাস্যরস)।
এবার সেই ভাতের হোটেল প্রসঙ্গ টেনে কথা বললেন ডিবিপ্রধান। আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, ‘ভাতের হোটেল—আসলে রসবোধ থেকে বলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডিবি কার্যালয়কে ‘ভাতের হোটেল’ বলে প্রচলিত সমালোচনাকে ইতিবাচক হিসেবেই নিয়েছে ডিবি পুলিশ।
এক প্রশ্নে হারুন বলেন, ‘এটা আসলে রসবোধক প্রশ্ন। বাঙালি রসবোধক জাতি। বাংলাসাহিত্যে রসবোধ প্রয়োগ কিন্তু আমাদের মানসিক খোরাক জোগায়। আমি মনে করি, এটা রসবোধ প্রবণ একটি বিষয় যে, ডিবি ভাত খাওয়ায়। আমরা তো আসলে কাউকে ডেকে এনে খাওয়াই না। কেউ যদি কাজের জন্য আমাদের কাছে আসে, তার কাজটা করে দেওয়ার চেষ্টা করি। আর পাশাপাশি লাঞ্চ টাইম হলে লাঞ্চের অফার করি।’
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ‘সেই ব্যক্তি যদি অফার গ্রহণ করেন, তাহলে খেয়ে যান। আর আমরা তো ব্রিটিশ পুলিশ না। আমরা এখন স্বাধীন দেশের পুলিশ। একটা সময় থানাতে যেতে মানুষ ভয় পেত। আর এখন আমি একজন ডিআইজি। শতশত লোক কোনো না কোনো কাজে এখানে আসছে। সাইবার বুলিংসহ বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে মানুষ আমাদের কাছে আসছে।’
হারুন বলেন, ‘সাংবাদিকরাও বলেন, ডিবি একটি আস্থার জায়গা। ডিবিতে সব ধরনের মানুষের অভিযোগ শোনা হয়। আমি মনে করি, ডিবি যেহেতু একটি আস্থার জায়গা, ডিবিতে যেহেতু সাধারণ মানুষ আসে, তাই আমরা তাদের কাজ করে দিই। এটা আমাদের একটা দায়িত্ব। আর ডিবি পুলিশ যে মানবিক এটার উদাহরণ হচ্ছে—আমরা মানুষকে আপ্যায়ন করি।’
ডিবিপ্রধান বলেন, ‘ইসলাম ধর্মেও কিন্তু আছে, কোনো মানুষ যদি কারও বাড়িতে আসে তাকে আপ্যায়ন করতে হয়। আমরা স্বাধীন দেশের পুলিশ। আমরা যদি কাউকে আপ্যায়ন করি, এটা তো খারাপ কিছু না। আর যারা রসবোধ থেকে ভাতের হোটেল বলে, তারাও কিন্তু ভালো অর্থে বলে, খারাপ অর্থে বলে না। এতে আমরা উৎসাহিত হই।’
‘‘মানুষ এসে কাজ করে যাচ্ছে এবং খেয়ে যেতে পেরে আমাদের প্রশংসাও করছে’ জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘লাঞ্চের টাইমে খেয়ে যেতে পারলে মানুষ খুশি হয়। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করি, পাশাপাশি মানবিক পুলিশ হিসেবে মানুষকে আপ্যায়ন করি।’
এর আগেও ডিবিপ্রধান এমন সমালোচনাকে ইতিবাচক নিয়েছিলেন। ২৮ আগস্ট দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেছিলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার। অনেকেই মনে করতে পারেন, ডিবি কার্যালয় একটা ভাতের হোটেল। এতে আমরা ডিমরালাইজড বা হতাশ হবো না। এটা আমাদের মানবিক দিক।