তিস্তা চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করতে চায় বাংলাদেশ
তিস্তা চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করতে চায় বাংলাদেশ। ভারতের নয়াদিল্লিতে আজ শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দুই দেশের মধ্যে ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়। হায়দ্রাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে তিস্তা চুক্তি এবং অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন চুক্তির দ্রুত সম্পন্নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সীমান্ত নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতার ব্যাপক দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশ রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ওপর থেকে বাণিজ্যবাধা অপসারণ এবং দুদেশের মধ্যে প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের ওপর জোর দেয়।
এফওসি হচ্ছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব বিষয় পর্যালোচনা করার জন্য পররাষ্ট্র সচিবদের মধ্যে একটি প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ প্রক্রিয়া।
আজ বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এফওসি সম্পর্কে নয়াদিল্লি ও ঢাকায় পৃথক বিবৃতি দিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরও গভীর ও প্রসারিত করার অনুরোধ করেছেন এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতের সহায়তা চেয়েছেন।
উভয় পক্ষ দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের জনগণের বৃহত্তর সমৃদ্ধির জন্য সহযোগিতা আরও গভীর করার ওপর জোর দিয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির অধীনে একমাত্র দক্ষিণ এশিয়ার নেতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘জি-২০ লিডারস সামিটে’ যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
উভয় পররাষ্ট্র সচিব বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং ২০২৩ সালে অর্জিত অগ্রগতির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
দুই প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে সংযোগ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য সম্প্রতি কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, এই ধরনের সহযোগিতা শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বাস্তব ফলাফলকে প্রতিফলিত করে।
দুই পররাষ্ট্র সচিব উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, আঞ্চলিক সংযোগ, আঞ্চলিক পাওয়ার গ্রিড সংযোগ, নিরাপত্তা ও পানি সংক্রান্ত সমস্যা, কনস্যুলার এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বাংলাদেশের উত্তরণের পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার বিষয়েও আলোচনা করেন। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী একটি শান্তিপূর্ণ সীমান্ত বজায় রাখতে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে উভয় দেশ ফের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
এ ছাড়া পারষ্পারিক সুবিধাজনক দিনে আগামী এফওসি বাংলাদেশ আয়োজন করবে বলে একমত হয়েছে দুদেশ। বাংলাদেশ ও ভারতের এই বৈঠক চলতি বছরের প্রথমবার গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর আজ দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো ভারতে।