শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিসৌধে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সর্বস্তরের মানুষ শহীদদের স্মরণে নির্মিত বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে রাজধানীর রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে অপরাজনীতি না থাকলে, দেশ আজ বহু দূর এগিয়ে যেতে পারত। অনেকে ভেবেছিল, বুদ্ধিজীবী হত্যার রায় হলেও বাস্তবায়ন হবে না। কিন্তু, অনেকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেও যুদ্ধপরাধীদের বিচার হয়েছে, সামনেও হবে।’
রায়েরবাজারে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, শিল্পকলা একাডেমি, নজরুল ইনস্টিটিউট, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, লালমাটিয়া বালিকা বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়সহ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-অভিভাবকরা।
এর আগে সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বিউগলে করুন সুর বাজানো হয়। শহীদদের সম্মানে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।
পরে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের নেতাদেরকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে একে একে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শহীদ পরিবারের সন্তান ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের দুদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর আলবদর, আল শামস ও রাজাকাররা জাতিকে মেধাশূন্য করতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের রাতের আঁধারে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের মাত্র দুদিন পর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।