নির্বাচনের নামে সহিংস কারচুপির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, দাবি বিএনপি

বিএনপি দাবি করেছে, নির্বাচনের নামে সহিংস কারচুপির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আজ রোববার (৩১ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে দলটি। তারা আরও দাবি করেছে, দেশে যে অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে, তার পেছনে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল, আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাংশ কোনো তদন্ত ছাড়াই এসবের দায় চাপাচ্ছে বিএনপির ওপর।
বিবৃতি বলা হয়েছে, “২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের পটভূমিতে আবারও আগামী ৭ জানুয়ারি। নির্বাচনের নামে একটি প্রহনসনমূলক ও সহিংস কারচুপির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তথাকথিত এই ‘ডামি নির্বাচন’ সামনে রেখে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যে নাশকতা চলছে, তাতে শুধু গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই নন, নিপীড়ন-নিষ্পেষণের শিকার হচ্ছেন খেটে খাওয়া, প্রান্তিক মানুষ।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান-কাঠামোতে, বিশেষত বাস-ট্রেনে পরিকল্পিত হামলার মাধ্যমে জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তা-স্বাধীনতা বিনষ্ট করছে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাংশ। চলমান অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনায় একটি সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা থেকে একমাত্র লাভবান আওয়ামী লীগ ও তার অধীনস্থ রাষ্ট্রযন্ত্র। আর প্রধান ভুক্তভোগী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।’
বিএনপি বিবৃতিতে দাবি করেছে, ‘শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাসীন শীর্ষ নেতৃত্ব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো তদন্ত, তথ্য বা সূত্র ছাড়াই প্রতিটি ঘটনাতে অবলীলায় ও একই সুরে অগ্নিসন্ত্রাসের দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। নিজেদের সুপরিকল্পিত এই ধ্বংসযজ্ঞকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহার করে তারা রাষ্ট্রীয় দমন-নিপীড়নকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন, যা শেখ হাসিনার প্রতিহিংসামূলক বক্তব্যে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। আমরা ইতিপূর্বে তাঁর কিছু সহিংস দিক-নির্দেশনা দেখেছি, যার মাঝে রয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীর হাত পুড়িয়ে ফেলা ও ভেঙে দেওয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেওয়া, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পান্না নদীতে চুবিয়ে আনা ইত্যাদি নানা বক্তব্য।’
বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, ‘গত ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় চলন্ত ট্রেনের তিনটি বগিতে অগ্নিসংযোগ ও চারজন যাত্রী মারা যান। ঘটনার বিশ্লেষণে প্রতীয়মান রাষ্ট্রযন্ত্রের একটি চিহ্নিত অংশের যোগসাজশে এই নাশকতা সংঘটিত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের দুদিন আগেই ১৯ ডিসেম্বরের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিশেষভাবে সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত শয্যা, জরুরি পরিষেবা, ডাক্তার এবং অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ—ডিএমপির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, এই নির্দেশনাটি কোনো কাকতালীয় বিষয় নয়। ডিএমপির এই প্রস্তুতিমূলক উদ্যোগ কেন নেওয়া হয়েছিল, নাশকতার সুস্পষ্ট তথ্য ও পরিকল্পনা তাদের কাছে কীভাবে এলো এবং তারপরেও এটি রোধে কেন তারা কোনো ব্যবস্থা নিলেন না, জনমনে এসব প্রশ্ন রয়েছে। অথচ আমরা গভীর হতাশার সঙ্গে দেখলাম, ঘটনার পরপরই ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান দাবি করে বসলেন, বিদেশে অবস্থানরত নেতাদের নির্দেশে এই হামলা হয়েছে এবং এর জন্য বিএনপিই দায়ী। কোনোরূপ তদন্ত বা প্রমাণ ছাড়াই নিজেদের ব্যর্থতা বা সম্পৃক্ততাকে আড়াল করতে পুলিশের একজন দায়িত্ববান ব্যক্তি কীভাবে আওয়ামী লীগের সাজানো বক্তব্যের প্রচারণায় অংশ নেন?’