নৌকার পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের অর্ধশত বাড়িঘরে হামলা-লুট
মুন্সীগঞ্জ সদরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নৌকার পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের অর্ধশত বাড়িঘরে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার (১৪ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আধার ইউনিয়নের শোলারচর ও বকুলতলা গ্রামের এই ঘটনা ঘটে।
হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই নারীসহ তিনজন। এ সময় স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও গরু-ছাগল লুটে নেওয়ার অভিযোগ ভোক্তভোগীদের। তাদের অভিযোগ, নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে নৌকার সমর্থন করায় জয়ী স্বতন্ত্রপ্রার্থী হাজি ফয়সাল বিপ্লবের সর্মথকরা এ হামলা চালিয়েছে।
আহত রেনু বেগম (৫০), মাহফুজ (৫০) ও শাহানাজকে (৫০) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় দুটি গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
ক্ষতিগ্রস্ত ও স্থানীয়রা জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে সোলারচর ও বকুলতলা এলাকায় পরাজিত নৌকা ও জয়ী স্বতন্ত্রপ্রার্থী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। আজ ভোর সাড়ে ৬টার দিকে সেই বিরোধকে কেন্দ্রে বিজয়ী ফয়সাল বিপ্লবের সমর্থক উত্তর শোলারচর গ্রামের বোরহান মাস্টারের ছেলে আহাদুলের নেতৃত্বে হঠাৎ করে শোলারচর ও বকুলতলা গ্রামে হামলা চালানো হয়। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেশি অস্ত্র নিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। হামলাকারীরা প্রায় অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি ভাঙচুর, বকুলতলা গ্রামের মোড়ে সাতটি দোকানের মালপত্র, ১৫টি গরু ও আটটি ছাগল নিয়ে যায়। এ সময় লুট করা হয় স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থও।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মাহাবুব ভুইয়ার স্ত্রী জাকিয়া বেগম জানান, তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে পাঁচটি গরু, আটটি ছাগল ও ১০ ভরি স্বর্ণ লুট করে নেওয়া হয়েছে। তাদের বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এই হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া দুটি সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়ে যায় হামলা কারীরা।
এ ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
বকুলতলা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত আমিন উদ্দিন সরকারের মেয়ে পান্না বেগম বলেন, ভোরে কাঁচির সমর্থক আহাদুলের নেতৃত্বে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও পাঁচ ভরি স্বর্ণ লুটে নিয়েছে। এ সময় তাঁরা আমাদের বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
এ বিষয়ে জানতে আহাদুলের সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খাইরুল হাসান জানান, সকালে এলাকাটিতে সংঘর্ষের খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে ফোর্স নিয়ে এলাকায় উপস্থিত হই। আমরা সাতটি ঘর ভাঙচুরের চিত্র দেখেছি। এলাকাটিতে পাঁচটি টিম মোতায়েন করা হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য। চারটি গরু ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। আগে থেকেই দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল।