৭৭১ নারীর সঙ্গে প্রতারণার সেই ‘ফেসবুক মাস্টার’ রিমান্ডে

Looks like you've blocked notifications!
গ্রেপ্তারের পরমোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। পুরোনো ছবি ডিএমপির

৭৭১ নারীর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে দুদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী ‘ফেসবুক মাস্টার’ নামে খ্যাত আনোয়ারকে রিমান্ডে নিতে আবেদন মঞ্জুর করে এই আদেশ দেন। এদিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা আসামি আনোয়ারকে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছিলেন।

সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীনের নামে ফেসবুক আইডি ও হোয়াটসঅ্যাপে ৭৭১ নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ও আপত্তিকর ছবি আদান-প্রদানের ঘটনায় বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী থানায় এসে হাজির হন। এরপর মোহাম্মদ মহসীন নিজে বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগেও এমন ঘটনায় ওসি মহসীন তেজগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। মামলার তদন্তে নেমে গাইবান্ধা থেকে আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি কম্পিউটার, আইপি ক্যামেরা, রাউটার ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। 

মামলার প্রেক্ষিতেই গতকাল শুক্রবার গাইবান্ধা জেলার সদর থানার স্টেশন রোডের দাশ বেকারি মোড়ের ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানার একটি বিশেষ টিম।  গতকাল শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) লিটন কুমার সাহা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আনোয়ারকে গ্রেপ্তারের পর তার কম্পিউটার ও মোবাইলে রাষ্ট্রপতি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খান, তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন, চিত্রনায়ক শান্ত খান, অভিনেতা ও মডেল আব্দুন নুর সজল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামের ফেসবুকের আইডি পাওয়া যায়। এর মধ্যে কয়েকটি আইডি ডিজেবলড পেলেও বাকিগুলো সচল অবস্থায় পাওয়া যায়।

লিটন কুমার বলেন, আনোয়ার পঞ্চম শ্রেণি ফেল হলেও কখনও ওসি সেজে, কখনও নায়ক সেজে, কখনও বা জনপ্রতিনিধি সেজে মেয়েদের সঙ্গে চ্যাটিং করতেন। ভুয়া আইডি খুলে এ পর্যন্ত সে সাড়ে ৭শ'র বেশি নারীর সঙ্গে কথা বলেছে।  শিক্ষার্থী, গৃহিণী, প্রবাসী, মডেল সবাই আছেন তার এই তালিকায়। ম্যাসেঞ্জারে কথা বলার পরে হোয়াটসঅ্যাপেও তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কথা বললেও কারও সঙ্গে ভিডিও কলে আসতেন না তিনি। আবার কেউ তাকে দেখতে চাইলে কিংবা সন্দেহ করলে তাকে ব্লক করে দিতেন। তিনি মূলত মেয়েদের সঙ্গে আপত্তিকর কথাবার্তা বলতেন। এদের মধ্যে কারও কারও সঙ্গে ছবিও আদান প্রদান করেছেন। আবার কারও কারও কাছে টাকাও দাবি করেছেন।

লিটন কুমার আরও বলেন, চাকরির ফাঁকে ফাঁকেই আনোয়ার ইউটিউব দেখে দেখে ফেসবুকের বিভিন্ন কলাকৌশল শেখেন। এভাবে শিখে শিখেই সে বিভিন্ন মানুষের ফেসবুকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে দেন। তা ছাড়া গাইবান্ধা জেলার সদর থানার খোলাবাড়ি গ্রাম ও দাশ বেকারি মোড় এলাকায় সে ‘ফেসবুক মাস্টার' নামেই পরিচিত। তার এলাকার যেকোনো ব্যক্তির আইডি, পাসওয়ার্ড হারিয়ে গেলে তা উদ্ধার, পেজ ভেরিফিকেশন, রিপোর্ট কিংবা স্ট্রাইক খাওয়া পেইজ রিকভার করাসহ ফেসবুকের যেকোনো সমস্যার সহজ সমাধান করে দিতেন।