রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে দুই সন্তানসহ পুড়ে মারা গেলেন নাজিয়া!
ব্যস্ত রাজধানীর বড় বড় শপিং সেন্টার, রেস্টুরেন্টের সমারোহ এলাকা বেইলি রোড। সময় পেলে কিংবা ছুটি নিয়ে সেখানে সপ্তাহে অন্তত একবার ঢু মারেন অনেকে। বন্ধুবান্ধব, পরিবার নিয়ে খেতে যান এ জায়গায়। তেমনি এক পরিবার আশিক নাজিয়া দম্পতি। ব্যবসায়ী আশিক বনানীতে নিজ অফিসে থাকাবস্থায় সন্ধ্যায় স্ত্রী নাজিয়া ফোন করে বলেন, ‘বাচ্চা দুইটা কান্না করছে, কী করব?’ বাচ্চাদের কান্না থামাতে আশিক সন্তানদের নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে যেতে বলেন। বেইলি রোডের আগুন লাগা ভবনের তৃতীয় তলায় দুই ছেলে আয়াত (৮) ও আয়ানকে (৬) নিয়ে খাবার খেতে যান নাজিয়া। সেখানেই দুই সন্তানসহ আগুনে পুড়ে মারা যান তিনি।
আজ শুক্রবার (১ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সামনে এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন আশিকের ফুফাতো ভাই রিফাত। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের বাণিজ্যিক বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে।
রিফাত বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে বাচ্চাদের কান্নার কথা ভাইয়াকে ফোনে জানান ভাবি। পরে ভাইয়ার (আশিক) অনুমতি নিয়ে ভাবি দুই ছেলেকে নিয়ে ওই ভবনের তৃতীয় তলায় থাকা রেস্টুরেন্টে যান। সাড়ে ১০টার দিকে ভাবি ভাইয়াকে ফোনে জানান, রেস্টুরেন্টে আগুন লেগেছে, ছোট ছেলে আয়ানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে আর ফোনে কথা বলতে পারেননি।’
ওই ভবনের তৃতীয় তলার সিঁড়ি থেকে শিশু আয়ানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আগুনে নাজিয়া ও আয়তও মারা যায়। ঢামেক হাসপাতালের মর্গে তাদের মরদেহ রাখা হয়েছে।
রিফাত বলেন, ‘আমরা আয়ানকে সিঁড়িতে পেয়েছি। তার মরদেহ বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছোট বাচ্চা ধোঁয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে হয়তো মারা গেছে। ভাবি আর আয়াতের মরদেহ মর্গে আছে। আমি ও অন্য আত্মীয়রা মরদেহ নিতে এসেছি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রেস্টুরেন্টটিতে আগুন লাগে। পরে তা পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে ২২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আগুনের এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।