রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া কাল হল পপি আর দুই সন্তানের
বেইলি রোডের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন পপি রায় এবং তার দুই সন্তান সম্পূর্ণা রায় (১২) ও সান রায় (১০)। আজ শুক্রবার (১ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গের সামনে পপি রায়ের স্বজনরা আহাজারি করে, চিৎকার করে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন।
নিহত পপি রায়ের ভাই পীযূষ পোদ্দার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গের সামনে চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আগুনে একটি পরিবার শেষ হয়ে গেল। আগুনে একটি পরিবার শেষ হয়ে গেল।’ পীযূষ পোদ্দার জানান, ভাগনি সম্পূর্ণা পড়ত সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। আর সান রায় পড়ত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণিতে। মা–বাবার সঙ্গে মালিবাগে থাকত তারা। সম্পূর্ণা ও সানকে বৃহস্পতিবার স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলেন মামা পীযূষ পোদ্দার। স্কুল শেষে আবার বিকেলে তাদের বাসায় নিয়ে আসেন তিনি। সম্পূর্ণা ও সান মা পপি রায়ের সঙ্গে সন্ধ্যার সময় আসেন বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয়।
পীযূষ পোদ্দার আরও জানান, রেস্তোরাঁয় আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেখানে চলে যান। এসে দেখেন দাউ দাউ করে রেস্তোরাঁ জ্বলছে। কিন্তু কোথাও পপি, সম্পূর্ণা ও সানের খোঁজ পাননি। এরপর মধ্যরাতে ছুটে এসেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। সম্পূর্ণা ও সানের মরদেহ খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু পপির কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না।
এদিকে বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করতেন মেহেরা কবির (দোলা)। তাঁর বোন মায়েশা কবির পড়তেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। দুই বোন মিলে মতিঝিলে থাকতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে মতিঝিল থেকে তাঁরা বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় খেতে আসেন। আগুনে পুড়ে এই দুই বোনও মারা গেছেন। তাঁদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালের বাতাস।
বেইলি রোডের বহুতল ভবনের আগুনে সম্পূর্ণা, সানের মতো ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।