ব্যক্তি উদ্যোগে পালিত ৫০ চিত্রাহরিণ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে হস্তান্তর
গাজীপুরে ব্যক্তি উদ্যোগে পালিত হরিণ থেকে ৫০টি চিত্রা হরিণ সরকারি প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে হস্তান্তর করেছে একটি বেসরকারি সংস্থা। আজ রোববার (১০ মার্চ) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে হরিণগুলো হস্তান্তর করা হয়।
চিত্রাহরিণ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ ঢাকা অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, গ্রিনভিউ গল্ফ রিসোর্টের ল্যান্ড অ্যাডভাইজার বুলবুল ইসলাম প্রমুখ।
চিত্রা হরিণগুলো যাতে বনের পরিবেশে থাকে এবং সাধারণ মানুষ যাতে সেগুলো দেখতে পায় এমনটি ভেবেই বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে হরিণগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। এটিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অনন্য নজির বলে মনে করছে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ভাঙনাহাটি এলাকায় বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত গ্রিন ভিউ গল্ফ রিসোর্টের অভ্যন্তরে নির্দিষ্ট এলাকায় এক যুগ ধরে কয়েক একর জায়গাজুড়ে চিত্রা হরিণগুলো লালন-পালন করছিলেন ফকির অ্যাপারলস ও গ্রিন ভিউ গল্ফ রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফকির মনিরুজ্জামান।
গ্রিন ভিউ গল্ফ রিসোর্টের হরিণ কোথাও বিক্রি বা খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। এবার এই খামার থেকে ৫০টি হরিণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে মুক্ত পরিবেশে পালনের জন্য প্রদান করা হলো।
গ্রিন ভিউ রিসোর্টের ভূমিবিষয়ক উপদেষ্টা মো. বুলবুল ইসলাম জানান, ব্যক্তিগত উদ্যোগে পালিত হরিণ যাতে বনের পরিবেশে থাকে এবং সাধারণ জনগণ যাতে এগুলো দেখতে পায় সেজন্য বিনামূল্যে ৫০টি হরিণ সাফারি পার্ককে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সরকারি হিসাব অনুযায়ী একটি হরিণের দাম দুই থেকে তিন লাখ টাকা হবে।
গত বছরের ২৪ আগস্ট বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তরে হরিণগুলো হস্তান্তরের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। ৭ সেপ্টেম্বর অধিদপ্তর হরিণগুলো হস্তান্তরের অনুমতি দেয়।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, প্রথমে চিত্রা হরিণগুলো বনের পরিবেশে ১৫ দিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এদের পূর্ণাঙ্গ সুস্থ বিবেচিত হলে উন্মুক্ত সাফারি পার্কে ছেড়ে দেওয়া হবে। সেখানে বনের মুক্ত পরিবেশে হরিণগুলো আরও ভালো থাকবে বলে জানান সাফারি পার্কের এই কর্মকর্তা।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, ব্যক্তিগত উদ্যোগে অথবা ফার্মে পালিত বন্যপ্রাণীগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠানে হস্তান্তর করা একটি মহতী উদ্যোগ। এই হরিণগুলো বন্দি অবস্থায় ছিল সাফারি পার্কে এগুলো মুক্ত অবস্থায় বিচরণ করবে। এখানে দর্শনার্থীরা আসবে, দেখবে। হরিণগুলো বিনামূল্যে হস্তান্তর একটি অনন্য নজির বলেও মনে করছেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের এই কর্মকর্তা।
শারমিন আক্তার বলেন, আশা করছি—এ ধরনের উদ্যোগ শুধু এই প্রতিষ্ঠানই নয়, যারা ব্যক্তিগত বা খামার হিসেবে বন্যপ্রাণী লালন পালন করে থাকেন তারা সবাই এভাবে এগিয়ে আসবেন।’
গ্রিন ভিউ গল্ফ রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ প্রায় একযুগ ধরে সরকারি বিধি ও আইন মেনে হরিণ পালন করে আসছে। সঠিক পরিচর্যা ও পরিবেশ অনুকূল থাকায় হরিণগুলো দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে আসছে বলেও তিনি জানান তিনি।