আইনজীবীদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছি : ব্যারিস্টার কাজল
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোটগণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি-জামায়াতপন্থি নীল প্যানেলের সম্পাদক পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে চার দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার (১০ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নূরুল হুদা চৌধুরী এই আদেশ দেন। এ দিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ব্যারিস্টার কাজলকে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ। শুনানি শেষে বিচারক চারদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ড শুনানির সময় ব্যারিস্টার কাজলের পক্ষে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, মাসুদ আহম্মেদ তালুকদারসহ অনেক আইনজীবী শুনানি করেন। এ সময় ব্যারিস্টার কাজল আদালতের অনুমতি নিয়ে শুনানিতে বলেন, “আমি আইনপেশার পাশাপাশি আইনজীবীদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছি। আমাদের বন্ধুরা আমার ব্যাকগাউন্ড সম্পর্কে বলেছে, আমি বোর্ডস্ট্যান্ড করা ছাত্র। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি (অনার্স) ও এলএলএম করেছি। আমি ঐতিহাসিকভাবে লন্ডন থেকে এলএলবি অনার্স করেছি। আমি এক বছরের মধ্যে ব্যারিস্টার হয়েছি। আমি লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সরকারের লাল পাসপোর্টওয়ালা একজন কূটনৈতিক। ২০২০ সালে আমি প্রথম সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি এবং আমি সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে পাস করি।”
ব্যারিস্টার কাজল আরও বলেন, ‘মজার বিষয়ে হলো ২০২০ সালে আমি যার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম তিনি হলেন শাহ মঞ্জুরুল হক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজ ২০২৪ সালে শাহ মঞ্জুরুল হককে ভোটের মাধ্যমে নয়, অন্য কোনভাবে বিজয়ী ঘোষণা করার জন্য সমস্ত নাটকটি সাজানো হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমাকে গ্রেপ্তার করে রাখা হয়েছে। পৃথিবীর এমন কোনো সভ্য দেশ নেই, যেখানে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ঘায়েল করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।”
ব্যারিস্টার কাজল শুনানিতে আরও বলেন, “আমি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পর পর তিন বার সম্পাদক। আমি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে সর্বোচ্চ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছি। আপনি জানেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাধারণ আসনে সারা দেশের আইনজীবীরা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন।”
শুনানিতে ব্যারিস্টার কাজল বলেন, “আমার বন্ধু ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, বিগত ১০ বছরে আমার মতো সুপ্রিম কোর্ট বারে একাধিক মামলা কেউ করেনি। আমি অনেক জুনিয়র আইনজীবীদের মামলা করেছি। তাদের মামলা করে সহায়তা করেছি।”
এর আগে শনিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনের তোপখানা রোডে নিজ চেম্বার থেকে ব্যারিস্টার কাজলকে আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করলে তাকে এ ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এছাড়া একই মামলায় গতকাল পাঁচজন আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন সিএমএম আদালত।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনের ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জনের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার রাতে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফ বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেন।
মামলায় আসামিদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেলের সম্পাদক পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলও রয়েছেন।