বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে রোববার টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন উপলক্ষে আগামীকাল রোববার (১৭ মার্চ) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
রোববার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে হেলিকপ্টারে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হবেন। এরপর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন হেলিকপ্টারযোগে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাবেন। এরপর টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে পৌঁছে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপরে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে বঙ্গবন্ধুসহ ৭৫ এর ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেবেন তাঁরা। দোয়া মোনাজাত শেষে রাষ্ট্রপতি হেলিকপ্টার যোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।
রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানিয়ে বেলা ১১টায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ, বেলা ১১টা ১০ মিনিটে স্বাগত বক্তব্য দেবেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। বেলা সোয়া ১১টায় বঙ্গবন্ধু ও শিশু অধিকার বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী করা হবে। এরপর শিশু প্রতিনিধি বক্তব্য এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেবেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি। বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান এবং অসচ্ছল-মেধাবী শিশু শিক্ষার্থীদের মধ্যে অর্থিক অনুদান প্রদান করবেন। এর পরে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা স্মারক উপহার দেওয়া হবে। এরপর প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফটোসেশন ও জাতির পিতার সমাধি প্রাঙ্গণে আয়োজিত তিনদিনব্যাপী বই মেলা ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আঁকা চিত্রপ্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশ্যে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির আগমনকে ঘিরে উৎসব ও আনন্দ বিরাজ করছে গোপালগঞ্জে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু তোরণ। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন নেতাকর্মীরা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দুই সরকার প্রধানের আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে গোপালগঞ্জকে।
গোপালগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী পর্শিয়া সুলতানা বলেন, আমরা এই দিনটির জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকি। দেশের যে যেখানে থাকে সেখান থেকেই ছুটে আসেন এই দিনে। প্রতিটি শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। বঙ্গবন্ধু শিশুদের অনেক আদর স্নেহ করতেন। সেজন্যই ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। তাই আমরা এই দিনটিকে উৎসব আনন্দে কাটাই।
টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফোরকান বিশ্বাস বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর পূণ্যভূমি এই টুঙ্গিপাড়া। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়া পৌরসভায় সাজ সাজ রব। দলীয় নেতাকর্মীসহ টুঙ্গিপাড়ার সর্বস্তরের মানুষ এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করেন। আমরা টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীর একজন ভোটার হিসেবে, কর্মী হিসেবে তাকে স্বাগত জানানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, আমরা গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার নেতা-কর্মীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি কখন তিনি আসবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় যে সকল অনুষ্ঠান হবে সে সকল অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অনুষ্ঠানমালা যাতে সুশৃঙ্খল ও সুন্দর পরিবেশে রোজার সম্পন্ন হয় সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহাব উদ্দিন আজম বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের জেলার মেয়ে।
তিনি টুঙ্গিপাড়ায় আসবেন সেজন্য আমরা আনন্দের দিন গুনছি। আমরা তাকে কাছে পাব এটা আমাদের জন্য গর্বের। জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে আমাদের ঘরের মেয়েকে ঘরে পাব এই আনন্দে আমরা দলীয় নেতাকর্মীরা আনন্দে উৎফুল্ল।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া আলোচনা সভা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান, বইমেলা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী সহ সকল ধরনের আয়োজন আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তার পাশাপাশি উৎসবমুখর পরিবেশে করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সহযোগিতায় আমাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।