মোংলা ইপিজেডে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ
মোংলা ইপিজেডে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেচে। আজ সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঘটে এ ঘটনা।
ইপিজেডে ভিআইপি নামে ভারতীয় কোম্পানির মালিকানাধীন একটি ব্যাগ তৈরির কারখানার প্রায় দেড় সহস্রাধিক শ্রমিককে ঈদের আগে হঠাৎ করে ছাঁটাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিকরা কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ ও শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের পাওনা পরিশোধের দাবিতে সকাল ৯টার পর থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ইপিজেডের গেট ও ভিআইপি ফ্যাক্টরি এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালনসহ দফায় দফায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। এ সময় বিক্ষুব্দ নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা ফ্যাক্টরি এলাকায় ইট পাটকেল নিক্ষেপসহ ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে ইপিজেডের নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ লাঠি চার্জ ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ এ ঘটনায় কয়েকজন শ্রমিককে আটক করেছে।
কারখানা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক ও পুলিশ সূত্র জানায়, মোংলা ইপিজেডের অভ্যন্তরে লাগেজ (ব্যাগ) উৎপাদনকারী ভারতীয় কোম্পানির মালিকানাধীন ‘ভিআইপি’ নামে প্রতিষ্ঠানে গত কয়েক মাস ধরে লোকসান চলছিল। এতে কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ এক বছর চাকরিরত এক হাজার ৭৭৭ শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরিতবাদে সকাল ৯টার দিকে ছাঁটাই করা শ্রমিকদের চলতি মার্চ মাসের বেতন ও ঈদুল ফিতরের বোনাস দেওয়া শুরু করলে শ্রমিকরা হট্রগোল শুরু করে। এ সময় শ্রমিকরা বাড়তি আরও তিন মাসের বেতন ও ঈদুল আজহার বোনাসের টাকার দাবিতে বিক্ষুব্দ হয়ে ওঠে। শত শত নারী পুরুষ শ্রমিক ইপিজেডের প্রধান গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে থাকে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে মারমুখী হয়ে ইপিজেডের গেটের ভিতরে কারখানা এলাকায় প্রবেশ করে ঢিল ও ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে এবং কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। এ সময় ইপিজেডের নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। পুলিশ বিক্ষুব্দ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপসহ লাঠিচার্জ করে বিকেল ৩টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় কয়েক শ্রমিক ও ইপিজেডের নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালালে বিক্ষুব্দ শ্রমিকরা বেপরোয়া হয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেশ কয়েকজন শ্রমিককে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।
এ দিকে ভিআইপি ফ্যাক্টরির মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, শ্রম আইন মেনে অগ্রিম বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়েছে। তার পরও কিছু উচ্ছৃখল শ্রমিক বিনা উসকানিতে ফ্যাক্টরিতে হামলা ও ভাচুর চালায়। এ ব্যাপারে তারা আইনের আশ্রয় নেবেন।