সুনামগঞ্জে ঘূর্ণিঝড়ে সাত শতাধিক বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড
সুনামগঞ্জে গতকাল রোববার (৩১ মার্চ) রাতের আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে সুনামগঞ্জ সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুধু শান্তিগঞ্জ উপজেলাই অন্তত পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ও দোকান লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এ সময় শতাধিক গাছ ভেঙে পড়েছে। কোথাও সড়কে গাছ পড়ে যান চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ঝড়ের কবলে পড়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলায় দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, রোববার রাত ১১টার দিকে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার কামরূপাদলং, সদরপুর, আস্তমা, তালুকগাঁও ও পশ্চিম পাগলা গ্রামেই অন্তত পাঁচশ বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। একইভাবে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দুই শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। মাত্র ৫ থেকে ৭ মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে চোখের নিমিষেই বাড়িঘর গাছপালা ভেঙে পড়ে। মানুষজন তখনও ঘরের ভেতর ঘুমিয়ে ছিল। তারা কোনোমতে পরিবার আর সন্তানদের নিয়ে ঘরের ভেতর থেকে প্রাণ নিয়ে বের হন। কিন্তু কোনো আসবাবপত্র বা ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বের করতে পারেননি। এদিকে মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তাই সহায়তা চেয়েছেন প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের।
সদরপুর গ্রামের সাহাবুদ্দিন (৪৬) বলেন, ‘কোনোমতে নিজের জান নিয়ে বের হয়েছি। পরে ঘরের ভিতর পরিবার সন্তান কান্নাকাটি শুরু করলে তাদের নিয়ে পালং এর নিয়ে আশ্রয় নিয়ে জান বাঁচিয়েছি।’
কামরূপদলং গ্রামের মো. শামছু মিয়া (৭৫) বলেন, ‘গতরাতে হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ে সব শেষ করে দিয়ে গেছে। মাত্র ৫ থেকে ৭ মিনিট ঝড় হয়েছে। আর তাতেই বসত ঘরের সব আসবাবপত্র পাশের জমিতে গিয়ে পড়েছে। এলাকার আশেপাশের আরও চার গ্রামের অন্তত তিনশ বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না।’
একই গ্রামের কলসু বেগম (৪০) জানান, ঋণ নিয়ে নতুন ঘর বানিয়েছিলেন, এখন সব কিস্তি দেওয়া শেষ হয়নি তার মধ্যে গতরাতের ঘূর্ণিঝড়ে সব তছনছ হয়ে গেছে। ঘরের তিনটা গরু চলে গেছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, ঝড়ের তীব্রতায় এই উপজেলার পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত পুনর্বাসন করা হবে।