শ্বশুরকে জবাই করে হত্যা
গোপালগঞ্জে জামাইয়ের হাতে শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা গাজী (৭৫) খুন হয়েছেন। পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরে থাকা বটি দিয়ে কুপিয়ে দেহ থেকে শশুরের মাথা বিচ্ছিন্ন করে দেন মেয়ে জামাই মুরাদ হোসেন মোল্লা (৪১)।
আজ শুক্রবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে জামাই মুরাদ হোসেন মোল্লা তাঁর শ্বশুর বাদশা গাজীকে বটি দিয়ে কোপ দিয়ে দেহ থেকে মাথা আলাদা করে দেন। এ সময় শ্বশুর বাদশা গাজী জুম্মার নামাজ আদায় করে এসে নিজ বাড়ির বসত ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। নিহত বাদশা গাজী চর ধলোইতলা গ্রামের মৃত আব্দুল ওদুদ গাজীর ছেলে।
মুরাদ হোসেন মোল্লার স্ত্রী তানিয়া রহমানের বরাত দিয়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আশরাফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, স্ত্রী তানিয়া রহমান ধলোইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তাই তাঁর স্বামী মুরাদ হোসেন মোল্লা শ্বশুর বাড়িতেই থাকেন। তাঁর বাড়ি নড়াইল জেলার চানপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুস সাত্তার মোল্লা। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি নড়াইলের চাঁনপুরে যান। আজ দুপুরে তিনি বাড়ি থেকে সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়ি চর ধলোইতলা গ্রামে আসেন। শ্বশুর বাদশা তাঁর নিজ ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। এ সময় বটি দিয়ে শ্বশুরকে জবাই করে গলা থেকে দেহ বিচ্ছিন্ন করে দেন জামাই মুরাদ। ঘটনার পর পালানোর সময় এলাকাবাসী তাঁকে আটক করে পুলিশের সোপর্দ করে।
মুরাদ হোসেন মোল্লা সৌদি আরব চাকরি শেষে গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর ধলোইতলা গ্রামে এসে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করতে থাকেন। বেশ কিছুদিন হলো তিনি তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে দোষারোপ করে আসছিলেন যে, তাঁকে তাবিজ-কবজ করে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তাই তিনি সম্প্রতি অস্বাভাবিক আচরণ করে আসছিলেন বলে তাঁর স্ত্রী তানিয়া রহমান জানিয়েছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. খায়রুল আলম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিচুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহত শ্বশুরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।