কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত চিকিৎসক মারা গেছেন
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/04/10/434691175_952541392876238_6008502859063898488_n.jpg)
চট্টগ্রাম নগরীতে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হওয়া চিকিৎসক কোরবান আলী মারা গেছেন। তিনি সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর দলের মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) ভোরে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা কোরবান আলীকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
হাসপাতালে যাওয়া নিহতের ছেলে আলী রেজার বন্ধু রাশেদুল আলম বলেন, ভোর ৬টা ৭ মিনিটে চিকিৎসক তাকে (কোরবান আলী) মৃত ঘোষণা করেছেন। পুলিশ হাসপাতালে এসেছে। এখান থেকে মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হবে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকেলে আকবর শাহ থানার পশ্চিম ফিরোজ শাহ হাউজিং এলাকার জে লাইন দিয়ে যাচ্ছিলেন আলী রেজা। তখন দুজন স্কুলছাত্র তার সাহায্য চায়। তাদের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মারধর করছিল। তিনি ৯৯৯ এ কল দেন। পুলিশ এসে তাদের একজনকে ধরে নিয়ে যায়। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় ইফতারি কিনতে বের হন আলী রেজা। তখন তাকে পেয়ে মারধর করতে থাকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন তার বাবা কোরবান আলী। একপর্যায়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ইটের আঘাতে তার বাবা মাথায় গুরুতর আঘাত পান। প্রথম তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আজ সকালে তার মৃত্যু হয়।
গণমাধ্যমকে আলী রেজার মা পারভীর আক্তার বলেন, ‘স্বামীকে হারিয়েছি। এখন ছেলেকে বাঁচাব কী করে?’
আলী রেজা বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে আমাকে বাঁচাতে গিয়ে বাবা মরে গেলেন। বাবাকে ছাড়া আমি বাঁচব কীভাবে? ওরা আবারও মারলে কে আমাকে বাঁচাতে আসবে? কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা সবাই স্থানীয় যুবলীগ নেতা গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী।’
এ ঘটনায় গত শনিবার আলী রেজা বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে আকবর শাহ থানায় মামলা করেন। এতে আসামি হিসেবে মো. সামির, মো. রিয়াদ, সোহেল ওরফে বগা সোহেল, মো. আকিব, মো. অপূর্ব, মো. নিশান, মো. রাজু, মো. সাগর, মো. বাবু, মো. রাজু, মো. সংগ্রাম ও মো. সাফায়েতের নাম উল্লেখ করেন। এ ছাড়া আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি হিসেবে রাখা হয়। এলাকায় তারা স্থানীয় যুবলীগ নেতা গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা পুলিশের রিমান্ডে রয়েছেন।
এ বিষয়ে আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আকবর শাহ এলাকার বাসিন্দা গোলাম রসুল নিশান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে তিনি পরিচিত।’