দুর্গাসাগরে গঙ্গাস্নানে নেমে কলেজছাত্রের মৃত্যু
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দুর্গাসাগরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যস্নানে নেমে ডুবে মারা গেছেন মনদ্বীপ মণ্ডল (১৮) নামে এক কলেজছাত্র। আজ মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার মাধবপাশা দুর্গাসাগরে এ ঘটনা ঘটে।
হাজার হাজার পুণ্যার্থী স্নান চলাকালে মনদ্বীপ মণ্ডল নিখোঁজ হন। আধা ঘণ্টা পর নিথর দেহ ভেসে উঠলে তাঁকে উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সাঁতার না জানলেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে স্নানে নেমে নিখোঁজ হন তিনি।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলম।
নিহত মনদ্বীপ বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তিনি বরিশাল নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোডের বাঁশতলা এলাকার ঘোষবাড়ির বাসিন্দা সাগর মণ্ডলের ছেলে।
শেবাচিম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বর ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মৃত অবস্থাতেই তার দেহ ভেসে ওঠে।
এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন জানান, মৃতদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে।
দুর্গাসাগর দীঘির ইতিহাস : চন্দ্রদ্বীপের রাজবংশের চতুদর্শ রাজা শিবনারায়ণের অকালমৃত্যুর সময় তাঁর স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন। শিব নারায়ণের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে পঞ্চদশ রাজা জয়নারায়ণ জন্মগ্রহণ করেন। বিধবা রানি দুর্গাবতী বুদ্ধিমতি ও প্রজাবৎসল ছিলেন। ১৮ শতকের শেষভাগে নাটোরের রানি ভবানী ও চন্দ্রদ্বীপের রানি দুর্গাবতী জমিদারি পরিচালনা করে বাংলার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি প্রজাদের মঙ্গলের জন্য অনেক পুকুর ও দীঘি খনন করেন। রানি দুর্গাবতী ১৮৭০ সালে বরিশালের বাবুগঞ্জে রাজধানী মাধবপাশায় এই দুর্গাসাগর দীঘি খনন করেন। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার দীঘিটি পূনঃসংস্কার করে। এই দীঘির নিচের অংশের দৈর্ঘ্য এক হাজার ৯৫০ ফুট এবং প্রস্থ এক হাজার ৭৫০ ফুট।