নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে চায় সরকার
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে বাংলাদেশের জীব-বৈচিত্র। এ ঝুঁকি মোকাবিলা করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার শতকরা ৪০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সূত্র এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য শক্তিসহ বাংলাদেশের এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। সেইসঙ্গে আমদানি হয় এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট। তবে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে চাহিদার খুব সামান্যই বর্তমানে যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম কেন্দ্র রয়েছে ১৫৪টি। যার মধ্যে বেশিরভাগই ভাড়ায় চালিত ডিজেল ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎশক্তি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মতে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বের হয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো কঠিন। তবে, তা অসম্ভব নয়। এটা জাতীয় অস্তিত্বের স্বার্থেই করতে হবে।
বর্তমানে নবায়নযোগ্য শক্তির সম্ভাবনার বিচারে বাংলাদেশের স্থান ৪১তম জানিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ বলেছে, দেশের উপকূলীয় এলাকায় বাংলাদেশে বায়ুর সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে সাত দশমিক ৭৫ মিটার, যা দিয়ে ৩০ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব। এ ছাড়া দেশের মোট জমির চার শতাংশ ব্যবহার করে নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে সম্পূর্ণ শক্তির চাহিদা মেটানো সম্ভব।
নবায়নযোগ্য শক্তির বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের মারাত্মক ঝুঁকি মোকাবিলা করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার শতকরা ৪০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত তাপমাত্রাজনিত পরিস্থিতি সামাল দিতে নগর ও শহরে প্রচুর পরিমানে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। সরকার প্রচুর সংখ্যক গাছ লাগাচ্ছে। জনগণকে ও প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। রাজধানী ঢাকায় মাটি ও পানির জলাশয়ের পরিমাণ বাড়াতে হবে।’
পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্যে আপডেট হওয়া এর লক্ষ্য। আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ছয় দশমিক ৭৩ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। আন্তর্জাতিক সহায়তায়, ২০৩০ সালের মধ্যে এই হ্রাসের পরিমাণ ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা অপরিহার্য।’