অধ্যক্ষকে প্রাণনাশের হুমকি যুবলীগনেতার
কলেজ পরিচালনা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে ময়মনসিংহ নাসিরাবাদ কলেজের অধ্যক্ষ আহমেদ শফিককে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন জেলা যুবলীগের এক নেতা।
গতকাল সোমবার (৬ মে) দুপুর পৌনে ১টায় অধ্যক্ষ আহমেদ শফিক ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে একটি পোস্ট দিয়েছেন। পোস্টে তিনি স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি বলেও জানান। এই শিক্ষকনেতা তাঁর পোস্টে লিখেন, ‘জন্মদিনের উপহার হিসেবে পেলাম প্রাণনাশে হুমকি’
এ ঘটনায় গত ৩০ এপ্রিল অধ্যক্ষ আহমেদ শফিক কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তবে পুলিশ এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেও জানান তিনি।
এই শিক্ষকনেতা তাঁর পোস্টে আরও লিখেন, ‘আমি ভাষাসৈনিক মরহুম আহমেদ সালেকের ষষ্ঠ সন্তান। আজীবন আমার আদর্শ পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করেছি, সত্য-সুন্দরের বন্দনায় আমার ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করতে নিয়োজিত থেকেছি এবং একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার সাধনা করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসিরাবাদ কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর অদ্যবধি কলেজটি দুর্নীতিমুক্ত একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে আজও নিরলসভাবে কাজ করে চলেছি। কিন্তু কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি ও মহল নিতান্ত ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একের পর এক অপবাদে আমাকে অভিযুক্ত করে আমার কর্তব্য পালনে বাধা প্রদানের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে আখেরুল ইমাম সোহাগের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশত সন্ত্রাসী নাসিরাবাদ কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে এবং আখেরুল ইমাম সোহাগসহ মোট পাঁচজন অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করে ‘গুলি কইরা মাইরা ফালামু’ বলে আমাকে হুমকি দেয়। (এ ধরনের হুমকি ২০১৮ সালেও সে আমাকে দিয়েছিল।) সে থেকে আমি আমার জীবনের চরম নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছি এবং বড় বেশি অসহায়ত্ব নিয়ে প্রতিটি মুহূর্ত অতিক্রম করছি।
এমতাবস্থায় স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদসহ সকল পর্যায়ের শিক্ষকদের সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করছি। প্রশাসনের কাছে আমার শিক্ষক-কর্মচারীসহ আমার নিজের জন্য নিরাপত্তা দাবি করছি।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাসিরাদ কলেজছাত্র সংসদের সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি আখেরুল ইমাম সোহাগ বলেন, ফেসবুক কথোপকথনে অধ্যক্ষ আহমেদ শফিক আমার জিভ টেনে ছিড়ে ফেলতে চেয়েছেন এবং ইতর বলে গালাগাল দিয়েছেন। আর সেদিন ৩০ এপ্রিল আমি কয়েকজন কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে কলেজ অধ্যক্ষের অফিসে গিয়েছিলাম এক ছাত্রীর বেতন কমানোর দাবি নিয়ে। তিনি তার ফেসবুকে যে সব কথা লিখেছেন আমি সেরূপ কোনো আচরণ বা তাকে গুলি করে প্রাণনাশের হুমকি দেইনি।’