দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পদোন্নতি বন্ধের দাবি
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভায় প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ করে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রদানের দাবি জানানো হয়। সভায় অভিযোগ করা হয়, প্রশাসনে নিয়োগ, পদোন্নতি সবই হচ্ছে দলীয় বিবেচনায়। ফলে মেধাবী ও যোগ্যরা বঞ্চিত হচ্ছে। দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী না হয়ে দলদাসের মতো আচরণ করছে। ফলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। সরকার দলীয় লোকদের এসব অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট সংঘটিত হচ্ছে বলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
আজ বুধবার (২২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের (বিএসপিপি) এক সভায় এসব বলা হয়।
বিএসপিপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্ব ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, চিকিৎসা বিজ্ঞানী বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. আবদুল কুদ্দুস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম, কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমদ, প্রকৌশলী আবদুল হালিম, প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নু, সাংবাদিক খুরশীদ আলম, এ কে এম মহসীন, বাছির জামাল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিকুল ইসলাম, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের বেগম জাহানারা সিদ্দিকী, প্রকৌশলী ফখরুল আলম, সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।
সভার এক প্রস্তাবে বলা হয়, অনিয়ম দুর্নীতি চলছে ফ্রি স্টাইলে। কেউ যেন দেখার নেই। বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, পুলিশ, প্রশাসন ও শিক্ষা সেক্টরের দুর্নীতি এখন প্রকাশ্য। জবাবদিহির অভাবে প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি ঝেঁকে বসেছে।
প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও তিরস্কার ও বেতন হ্রাসের শাস্তি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগ নবীন হওয়ায় কম শাস্তির পাশাপাশি বড় দায় থেকেও অনেকে অব্যাহতি পাচ্ছেন। কিন্তু অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রশাসনে বেড়েই চলেছে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। আইনের ফাঁকফোকরে তিরস্কার কিংবা বেতন হ্রাস করে অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি না দেওয়ায় প্রশাসনে অনিয়ম-দুর্নীতি অব্যাহত আছে।
সভায় অপর এক প্রস্তাবে বলা হয়, সরকারি খাতে দুর্নীতির ব্যাপকতা বেড়েছে। বিশেষ করে সরকারি ক্রয়, প্রকল্প চুক্তি ও প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশি দুর্নীতি হচ্ছে। মেগাপ্রকল্পের নামে মেগাদুর্নীতি হচ্ছে। অর্থ পাচারের বিষয়ে তথ্য প্রকাশিত হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। ব্যাংক লুটেরাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলোতে রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ায় দুর্নীতিবাজদের লাগামটানা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ঘুষ লেনদেন ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ব্যক্তিগত স্বার্থে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে। রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, আর্থিকসহ বিভিন্নভাবে অর্জিত ক্ষমতাকে নিজের সম্পদ বিকাশের লাইসেন্স হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারের মন্ত্রীদের কেউ কেউ লন্ডনে আড়াইশ বাড়ির মালিক বনে যাচ্ছেন?