অপমানের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেলে লোহার খাঁচায় ঢুকতে হয় : ড. ইউনূস
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/06/02/yunus-photo_0.jpg)
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অভিশপ্ত জীবনটা বড় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তাই আমাকে লোহার খাঁচায় ঢুকতে হয়েছে। অপমানের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেলে লোহার খাঁচায় ঢুকতে হয়।
আজ রোববার (২ জুন) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষে গণমাধ্যমে এ কথা বলেন এই নোবেল বিজয়ী।
ড. ইউনূস বলেন, এটা আমার জীবনের একটা স্মরণীয় ঘটনা যে লোহার খাঁচার মধ্যে দাঁড়িয়েছিলাম আদালতের কাঠগড়ায়। এটা অভিশপ্ত জীবনের একটা অংশ। আমরা নোবেল পুরস্কারের কথা সবাই জানি। দুটি নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। একটা ছিল আমার নামে, আরেকটা গ্রামীণ ব্যাংকের নামে। দুটোরই সমান গুরুত্ব ও মর্যাদা। কারও চেয়ে কোনোটা কম নয়। এটা যৌথভাবে দেওয়া হয়েছে তাও না। দুটোই স্বাধীনভাবে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো নজির নেই, এক নোবেল বিজয়ী আরেকজন নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে মামলা করতে দুদকে হাজির হয়েছে। এটা আমাদের কপালে হলো। এটা অভিশাপের একটা অংশ। যে অভিশাপ আমরা গ্রহণ করে যাচ্ছি। সে অভিশাপ এমনভাবে হয়েছে, একটা নোবেল বিজয়ী এবং এ নোবেল বিজয়ী হলো খুবই সম্পৃক্ত নোবেল বিজয়ী। এটা আমার বিরুদ্ধে এমনভাবে নিয়ে এলো খুব কঠিন ভাষায়, রূঢ় ভাষায় আক্রমণ করে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, অভিযোগ থাকতে পারে, কিন্তু রূঢ় ভাষায় আক্রমণ করে অভিযোগগুলো করা হয়েছে এবং যে অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। এ ব্যাপারে আপনাদের জানিয়েছি–ঘটনা কী ঘটেছিল। তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত যত অভিযোগ এসেছে আমার এবং সহকর্মীদের বিরুদ্ধে, তা অভিশাপের একটা অংশ। এটা আমার কাছে মোটেই গ্রহণযোগ্য হয়নি। আমার বাবাকে আক্রমণ করেছে, ভাই-বোনদের আক্রমণ করেছে। এই যে সেটা অভিশপ্ত জীবনের একটা অংশ বলে গেলাম।
ইউনূস বলেন, এ সময় কেন তাদের অভিশপ্ত জীবন বহন করতে হচ্ছে সেটা আপনারা জানুন এবং লিখুন। শুধু জানা নয়, কিছু লিখুন। সত্যতা, গুরুত্বটা, ভূমিকাটা কী? রিপোর্টিং বলতে শুধু শুনলাম, লিখলাম, এটা না। এর একটা ব্যাখ্যাও আছে। গভীরে যাওয়া, সবাইকে জানান দেওয়া, সেটাও একটা অংশ।
নথি থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সংস্থাটির উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার। দুদকের মামলায় আসামি ছিলেন ১৩ জন। অভিযোগপত্রে নতুন একজন আসামির নাম যুক্ত হয়েছে।