ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে গণ্ডগোলে বেনজীরের দুর্নীতি সামনে এসেছে : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বেনজীর আহমেদ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক হিসেবে ক্ষমতায় থাকতে তাকে দিয়ে অনেক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে এই আওয়ামী লীগ সরকার। এই বেনজীরকে দিয়েই এই সরকার বিরোধীদলকে দমন, রাতে ভোট করে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কাজ করেছে। হঠাৎ করে বেনজীরের দুর্নীতির আমলনামা ফুঁটে উঠলো কেন? এর কারণ, সরকার আর বেনজীরের মধ্যে ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে গন্ডগোল হয়েছে।
আজ সোমবার (৩ জুন) বিকেলে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে (বিডি হল) দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা একটা ফ্যাসিস্ট সরকার তৈরি করেছেন। ভোটবিহীন এ কাজে তার বেনজীরকে লাগে, লাগে আজিজদের। জনগণের ভোট তার (শেখ হাসিনা) লাগে না।
রিজভী বলেন, ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলনের ডাক দিলে কলা-কচুক্ষেত, বাঁশ বাগান থেকে খুঁজে আন্দোলন নস্যাৎ করতে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। আর হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়ে বেনজীর আহমেদ বিদেশে পালিয়ে যাবেন তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ওবায়দুল কাদের, পুলিশ কিছুই জানে না—এটাও জনগণকে বিশ্বাস করতে হবে?
দেশে উন্নয়নের নামে গল্প শোনানো হয়—এমন মন্তব্য করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশে এতই উন্নয়নের গল্প হয়, আসলে উন্নয়ন এই দেশের খেটে খাওয়া মানুষের হয়নি। দেশে মোটা চাউলের দাম বাড়লেও চিকন চাউলের দাম বাড়ে না। এর কারণ চিকন চাউল ধনীদের খাবার। মোটা চাউল গরিবের খাবার। এই সরকার ধনীদের উন্নতি করছে। উন্নতি করছেন আমলাদের, দুনীর্তিবাজদের। উন্নয়ন করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের, এমপি-মন্ত্রী আওয়ামী লীগের ঠিকাদার ব্যবসায়ীদের। এই সরকার খেটে খাওয়া গরিব মানুষের কোনো উন্নয়ন করেনি।
দেশে লুটপাটের লঙ্কাকাণ্ড চলছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, উন্নয়নের নামে হরিলুটের লঙ্কাকাণ্ড বইছে। দেশের জনগণের সামগ্রিক উন্নয়ন হচ্ছে না। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেকার হচ্ছে বাংলাদেশে। সরকার যে ১৫ বছরে এতো উন্নয়নের কথা বলে, তাহলে এতো বেকার হচ্ছে কেন? উন্নয়ন হলে তো মানব উন্নয়ন হবে, শিক্ষিত তরুণরা চাকরি পাবে। এটাই তো উন্নয়নের নমুনা। আজ দেশে অনার্স মাস্টার্স পাস ছেলেরা রিকশা চালাচ্ছে, এটা কীসের আলামত? এটা গণতন্ত্রহীন সমাজ ব্যবস্থার আলামত।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সহসম্পাদক জাহানারা সিদ্দিকী, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, আবুল হোসেন আজাদ প্রমুখ।