সুনামগঞ্জে বাড়ছে নদীর পানি, সীমান্ত এলাকায় বন্যাতঙ্ক
গত দুদিন টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারও বাড়তে শুরু করেছে সুনামগঞ্জের সব নদ-নদীর পানি। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৫১৩ মিলিমিটার ভারী বৃষ্টির কারণে উজানের পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জে সুরমা, কুশিয়ারাসহ, সীমান্ত এলাকার যাদুকাটা, চলতি নদী, খাসিয়ামারা নদী ও চেলানদীর পানি কানায় কানায় ভরে গেছে। এর প্রভাবে ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা ও মধ্যনগরে বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্ট দিয়ে ৫৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি ছাতক অংশে ৪৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার আট সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
বন্যা আতঙ্কে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্দেশ্য চলে যাচ্ছে। একই উপজেলার সুরমা ও বোগলা ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রামে ঢলের পানি বেড়ে গেছে। দোয়ারাবাজার উপজেলার শরীফপুর সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় তিন ইউনিয়নের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের কলেজ শিক্ষার্থী মো. জাহিদ হাসান (২৪) জানায় গতকাল শুক্রবার রাত থেকে দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সড়কের ওপর দিয়ে ঢলের পানি যাচ্ছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার তনু জানান, সীমান্ত ইউনিয়ন গুলোতে উজানের পানিতে বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল কিন্তু দুপুরের পর থেকে উজানের ঢল কম থাকায় পানি কমছে। তবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, চেরাপুঞ্জিতে অধিক বৃষ্টি হওয়ায় ঢল এসে সুনামগঞ্জের নদ নদীর পানি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। টানা বৃষ্টি আর ঢল অব্যাহত থাকলে আজকের মধ্যে বিপৎসীমার অতিক্রম করে স্বল্পমেয়াদী বন্যা হতে পারে।