রেশনিং সুবিধা চায় শ্রমিকরা
সরকার ঘোষিত জাতীয় বাজেটে ৬ কোটি শ্রমিকের জন্য আলাদাভাবে কোনো খাত বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ফলে শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন। আজ শনিবার (২২ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি এড.মাহবুবুর রহমান ইসমাইল এই দাবি জানিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনম হাফিজ, গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা আক্তার প্রমুখ।
এড.মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, গত ৬ জুন সরকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট ঘোষনা করেছে। এতে জিডিপিতে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মাথাপিছু আয় ৩ লাখ ৬ হাজার ১৪৪ টাকা ঘোষনা করা হয়। এই হিসেবে মাসিক মাথাপিছু আয় দাড়ায় ২৫ হাজার ৫১২ টাকা। কথিত মাথাপিছু আয়, জিডিপি উন্নয়ন ও সূখী, সমৃদ্ধ-স্মার্ট বাংলাদেশ শিরোনামের বাজেট শ্রমিকদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন বা অগ্রগতি ঘটায়নি। দেশ বিদেশের মাথাপিছুর আয়ের এই খতিয়ানের গল্প প্রচার করা হলেও বাস্তবে এই হিসাব কাজির গোয়াল, খাতা কলমে আছে কিন্তু গোয়ালে গরু নাই। দেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে ১৪ কোটি মানুষের মাথা গোজার নিজস্ব কোন আবাসন নেই। ব্যাপকভাবে বেড়েছে আয়, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সম্পদ ও খাদ্য বৈষম্য। শ্রমিক পরিবার জেলখানার কয়েদির চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছে।
শ্রমিকদের পকেট থেকে লুটে নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এদের স্বার্থেই সরকার কালো টাকা (অপ্রর্দশিত আয়) ১৫ শতাংশ কর দিলেই বৈধ বা সাদা টাকা হয়ে যাওয়ার নীতিমালা গ্রহন করেছে। ফলে পুলিশের সাবেক আইজি বেনজিরের মতো দূর্নীতিবাজদের মতো আরও কয়েক হাজার দূর্নীতিবাজ দূর্নীতি করতে আরও বেশী উৎসাহিত হয়ে উঠবে। জাতীয় বাজেটে শিল্প বাজেট, কৃষি বাজেট, স্বাস্থ্য বাজেট, শিক্ষা বাজেট, প্রতিরক্ষা বাজেট ইত্যাদি বাজেট থাকলেও আলাদাভাবে শ্রমিকদের জন্য কোন বাজেট বরাদ্দের খাত নেই।
তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয় এবং প্রতিষ্ঠানে ১৪ লাখ কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের জন্য সুযোগ সবিধা বাদে শুধু বেতন-ভাতার ব্যয় বরাদ্দ ৮১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। কিন্তু বাজেটের এই টাকার অংক অথবা ১০ শতাংশ বরাদ্দ দিলে বাংলাদেশের গার্মেন্টস সহ ৬ কোটি শ্রমিকের স্বল্প মূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করে শ্রমজীবী মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তার সুরক্ষা দেয়া সম্ভব। উন্নয়ন ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির কথা যতই বলা হোক না কেন বৈষম্য অসমতা নিরসন হবে না।
বাস্তবে এই বাজেট বানরের পিঠা বন্টন গল্পের বিবরন ছাড়া আর কিছুই না মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই বাজেট ৬ কোটি খেটে খাওয়া শ্রমিকের অভাব অনটন আরও বাড়াবে। যেহেতু এই বাজেটে শ্রমিকদের জন্য কিছুই নাই সেহেতু বাংলাদেশের ৬ কোটি শ্রমিক এই বাজেট প্রত্যাখান করছে। আগামী ২৫ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের প্রতিটি শিল্প অঞ্চলে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়।